সৌদি আরব শাসক' একমাত্র পৃথিবীর সবচেয়ে ধনী দেশ
সৌদি আরবের শাসক |
সৌদ পরিবার বর্তমানে সদস্য সংখ্যা প্রায়
15 হাজার!
নজদ আমিরাত দ্বিতীয় সৌদি রাষ্ট্র হিসেবে পরিচিত |
1744 সালে মুহাম্মদ ইবনে সৌদ এবং মুহাম্মদ আব্দুল ওয়াহাবের মধ্যকার মিত্রতার মাধ্যমে এই রাষ্ট্র ব্যবস্থা চালু হয় সৌদি রাজবংশের প্রতিষ্ঠাতা মুহাম্মদ সৈয়দের পুত্র এবং আব্দুল ওহাবের মেয়ের বিবাহের মাধ্যমে দুই পরিবারের ঘনিষ্ঠতা তৈরি হয়েছিল’
বর্তমানকালেও সে বন্ধন অটুট রয়েছে ওসমানী অটোমান সাম্রাজ্য ধারা সেই প্রথম সৌদির রাষ্ট্র ধ্বংস হয়েছিল এরপর নজদ আমিরাত দ্বিতীয় সৌদি রাষ্ট্র হিসেবে পরিচিতি পায়’
প্রায়
73 বছরের দ্বিতীয় সৌদি রাষ্ট্র টিকে ছিল!
বিলাসবহুল |
প্রথম
সৌদি রাষ্ট্র ওহাবী মত বাদের বিস্তার ঘটানোর জন্য বিখ্যাত
দ্বিতীয় সৌদি রাষ্ট্র আভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব এবং বিদ্রোহের আলোচিত আর আধুনিক সৌদি
রাষ্ট্র মধ্যপ্রাচ্যে তাদের প্রভাব বিস্তার
এবং বিত্ত-বৈভবের জন্য
বিখ্যাত’
সুদীর্ঘকাল মধ্যপ্রাচ্যের বিস্তৃত অঞ্চল শুধুমাত্র আরব ভূখন্ড হিসেবে পরিচিত ছিল কিন্তু ব্রিটেন ও ফ্রান্সের মত উপনিবেশিক শক্তি এখানকার গোত্রগুলোকে বিভক্ত করে ছোট ছোট জাতিরাষ্ট্র গঠন করে’ এসব জাতিরাষ্ট্রের বিদ্রোহের ফলে অনেক আরব অঞ্চলে অটোমান সাম্রাজ্যের পতন ঘটেছিল’
মধ্যপ্রাচ্য জুড়ে নিজেদের প্রভাব বিস্তার করতে তৎকালীন পরাশক্তি ব্রিটেনের এই অঞ্চলের জাতিরাষ্ট্র গুলোতে বিভিন্ন পুতুল সরকার স্থাপন করে বর্তমান সৌদি রাজবংশ তার মধ্যে অন্যতম’ অটোমানদের দুর্বলতার সুযোগে আরব গোত্রপতির ব্রিটেনের সহযোগিতায় বিদ্রোহ করতে থাকে,
1916 সালে এই বিদ্রোহের সূচনা করেন তৎকালীন মক্কা নগরীর শাসক শরীফ হোসাইন বিন আলী তার উদ্দেশ্য ছিল কোম্পানির খেলাফতের অবসান ঘটিয়ে সংযুক্ত আরব রাষ্ট্র গঠন করার,
উসমানী
খিলাফত!
তার উদ্দেশ্য ব্যর্থ হলেও উসমানী খিলাফতের পতন ঘটে অন্যদিকে এই অঞ্চলের অটোমান নিয়ন্ত্রণ থাকাকালীন সময়ে 1902 সালের সৌদির রাজ বংশের প্রতিষ্ঠাতা আব্দুল আজিজ ইবনে সৌদ রিয়াদ দখলে নেয়’
পরবর্তীতে ইবনে সৌদ ওহাবী মতাদর্শের ইকোঅন নামক সৈন্যদলের সহায়তায় 1912 সালে আল-আকসা দখল করে ইবনে সৌদ বিভিন্ন সময়ে ব্রিটেন কাছ থেকে অস্ত্র ও অর্থ সহায়তা পেতে থাকে’ 1926 সালে ইবনে সৌদ হেজাজ অঞ্চল দখল করে এবং সৌদ নিজেকে হেজাজের রাজা ঘোষণা করে|
ইবনে সৌদ বিভিন্ন
প্রভাবশালী গোত্রে 22টি বিয়ে করে!
তখন আরব উপদ্বীপের নিজের শাসনের বৈধতা আনার জন্য ইবনে সৌদ বিভিন্ন প্রভাবশালী গোত্রে 22টি বিয়ে করে অবশেষে 1932 সালে হেজাজ ও নজেদ অঞ্চল একত্রিত করে আধুনিক সৌদি রাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয়’
বর্তমানে
সৌদি আরব মূলত দুটি
পরিবার নিয়ন্ত্রণ করে ইবনে সৌদের
পরিবার রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সিদ্ধান্ত
নেয় এবং আব্দুল ওহাবের
উত্তরসূরি আল আশেখ পরিবার ধর্মীয় ও
আইনগত সিদ্ধান্ত প্রদান করে’
1932 সালে প্রতিষ্ঠার সৌদি আরব ছিল পৃথিবীর অন্যতম দরিদ্র দেশ সৌদি আরব তখন কৃষি ও হজ থেকে প্রাপ্ত রাজস্বের উপর নির্ভরশীল ছিল 1938 সালে সৌদি অর্থনীতিতে আমূল পরিবর্তন আসে’
পারসি উপসাগরে অঞ্চলের তেল আবিষ্কারের পর সৌদি আরব রাতারাতি ধনী রাষ্ট্রে পরিণত হয়’ তেল উত্তোলনের জন্য ইবনে সৌদ ব্রিটিশদেরকে আমেরিকাকে প্রাধান্য দেয় 1938 সালে ইবনে সৌদ ক্যালিফোর্নিয়া তেল কোম্পানির মধ্যে একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়,
বিগত 80 বছরের
সৌদি পৃথিবীর শীর্ষ ধনী পরিবা!
একই বছর সৌদি আরবের প্রথম বাণিজ্যিকভাবে তেল উত্তোলন শুরু হয় বর্তমানে সৌদি আরবের রাষ্ট্রীয় মালিকানায় থাকা তেল কোম্পানি হলো সৌদি আরামকো, এটি পৃথিবীর সবচেয়ে মূল্যবান এবং লাভজনক কোম্পানিগুলোর মধ্যে একদম প্রথম সারিতে রয়েছে’
এই কোম্পানির কারণেই বিগত 80 বছরের সৌদি রাজপরিবার পৃথিবীর শীর্ষ ধনী পরিবারে পরিণত হয়েছে’ বর্তমানে সৌদি আরবের 786 বিলিয়ন ডলার’
জিডিপির প্রায় পুরোটাই সৌদি রাজপরিবার নিয়ন্ত্রণ করে সৌদি রাজপরিবারের সম্পদের মূল্য প্রায় দেড় ট্রিলিয়ন ডলার যা ব্রিটিশ রাজপরিবারের সম্পদের 16 গুণের ও বেশি|
পরিবারের
15 হাজার সদস্যের মধ্যে 2000 জন শীর্ষ ক্ষমতার
অধিকারী!
সৌদি রাজ পরিবারের 15 হাজার সদস্যের মধ্যে 2000 জন শীর্ষ ক্ষমতার অধিকারী দেশের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব গুলোকে তারাই রয়েছে’ আব্দুল আজিজ ইবনে সৌদ আধুনিক রাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠার পর থেকে তার 6 জন পুত্র রাজতন্ত্রের শীর্ষ ক্ষমতায় আসতে পেরেছে’
ইবনে সৌদ নিজে 1932 থেকে 1953 সাল পর্যন্ত বাদশা দায়িত্ব পালন করেন এরপর থেকে এখনো পর্যন্ত তাঁর পুত্ররাই ক্ষমতায় রয়েছে’ তার মানে সেই 1953 সালের পর থেকে প্রায় 67 বছরের সৌদি আরবে যতজন বাদশা এসেছেন তাদের সবাই আব্দুল আজিজের ছেলে’
বিগত বাদশাদের নাম থেকে সহজেই বোঝা যায় যেমন সৌদ বিন আব্দুল আজিজ ফয়সাল বিন আব্দুল আজিজ খালেদ বিন আব্দুলাজিজ ফাহাদ বিন আব্দুল আজিজ আব্দুল্লাহ বিন আব্দুল আজিজ এবং সালমান বিন আব্দুলআজিজ’
বাদশা
সালমান বিন আব্দুলআজিজ মারা
যাওয়ার পর!
বর্তমান বাদশা সালমান বিন আব্দুলআজিজ মারা গেলে এই ধারা প্রথমবারের মত পরিবর্তন আসবে তখন আব্দুল আজিজের নাতিদের মধ্য থেকে কেউ একজন বাদশা হবে’ বাদশা মারা যাবার পর যে যুবরাজ বাদশায়ি দায়িত্ব মনোনীত হন তাকে ক্রাউন প্রিন্স বলা হয়’
সৌদি আরবের মতো দেশে এই ক্রাউন প্রিন্স নির্ধারণ করাটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ কারণ যে দেশে হাজার হাজার যুবরাজ সেই দেশের বাদশার মৃত্যুর পরে ক্ষমতা দখলের জন্য কয়েক পাক্ষিক গৃহযুদ্ধ লেগে যাওয়া অসম্ভব কিছু না’
বর্তমান বাদশাহ সালমান প্রথমে তার ভাতিজা মোহাম্মদ বিন নায়েপকের ক্রাউন প্রিন্স হিসেবে মনোনীত করেছিলেন বাদশা সালমান পরবর্তীতে তার ভাতিজার বদলে তার ছেলে মোহাম্মদ বিন সালমান ওরফে এমবিএসকে ক্রাউন প্রিন্স মনোনীত করে’ এর মাধ্যমে 7 জন বাদশার পালাবদলের মাত্র দায়িত্ববারের মতো কোনো ছেলে তার বাবার বাদশাহী দায়িত্ব গ্রহন করতে যাচ্ছে’
টয়লেট টিস্যু হোল্ডার ও সোনা দিয়ে বানানো!
সৌদি রাজ পরিবারের সদস্যরা তাদের আড়ম্বরপূর্ণ জীবনযাপনের জন্য বহুল আলোচিত বেহিসেবি খরচ আর সম্পদের অপচয় এর জন্য তার কুখ্যাত বটে,
সৌদি রাজ পরিবারের প্রায় সবাই যার যার মতো বিলাসবহুল প্রাসাদে বসবাস করে তাদের লাগামহীন বিলাসিতা পৃথিবীর যে কাউকে হার মানাবে স্বর্ণের প্রতি তাদের রয়েছে সীমাহীন ভালোবাসা এমনকি তাদের টয়লেট টিস্যু হোল্ডার ও সোনা দিয়ে বানানো’
এসব ব্যক্তিদের মালিকানায় আছে সুপারি ইয়ট
বা পৃথিবীর সবচেয়ে বিলাসবহুল প্রমোদতরী বিলাসবহুল ব্যক্তিগত বিমান কিনা তাদের নিত্যনৈমিত্তিক বিষয়ে’
সৌদি রাজপরিবারের উচ্চাভিলাষের কথা আলোচনা করতে গেলে ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমানের কয়েকটি বিষয় উল্লেখ না করলেই নয় বিগত কয়েক বছর ধরে এই পরিবারের সবচেয়ে আলোচিত নাম MBS
বিতর্কিত
কর্মকাণ্ডের কারণে বিশ্বব্যাপী ব্যাপক
সমালোচিত!
এই যুবরাজ উচ্চাভিলাষ আর একের পর এক বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের কারণে বিশ্বব্যাপী ব্যাপক সমালোচিত হয়েছেন তিনি ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে তার চাচাতো ভাইকে সরিয়ে সুকৌশলে পরবর্তী বাচ্চা হওয়ার ব্যবস্থা পাকাপোক্ত করেছেন’ এছাড়া দুর্নীতিবিরোধী অভিযান চালিয়ে রাজপরিবারের শীর্ষ বেশ কয়েক জন সদস্যকে গ্রেফতার করে গৃহবন্দি করেছে’
2015 সালে প্রিন্স মোহাম্মদ তার অবকাশ যাপনের জন্য ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসের অদূরে লুমেন্স এলাকায় এক বিশাল প্রাসাদ কিনে নেই’