সুন্দরবনের টাইগার চিতা বাঘ গন্ডার বিলুপ্ত হওয়ার আসল কারণ

সুন্দরবনের টাইগার চিতা বাঘ গন্ডার বিলুপ্ত হওয়ার আসল কারণ

সুন্দরবনের বর্তমান অবস্থা
সুন্দরবনের প্রাকৃতিক দৃশ্য
সুন্দরবনের দ্বীপের নাম
সুন্দরবনের বন্যা
সুন্দরবনের ম্যাপ
সুন্দরবনের দ্বীপ সংখ্যা
সুন্দরবনের অবস্থান
সুন্দরবনের প্রাণী
সুন্দরবনের প্রাণী রচনা
বিভিন্ন ধরনের বাঘ সম্পর্কে তুমি যা জান লেখ
সুন্দরবনের প্রাণীদের বিলুপ্তির হাত থেকে রক্ষা করার উপায়
সুন্দরবনের প্রাণী বৈচিত্র্য
সুন্দরবনের প্রাণীর ছবি
সুন্দরবন ভ্রমন
sundarban
সুন্দরবন
sundarban
travel guidesundarban forest
সুন্দরবন ভ্রমণ গাইড
sundorban
এক দিনে সুন্দরবন ভ্রমণকটকা
করমজল
beautiful bangladesh
sundarban tour
বৈচিত্র্যের লীলাভূমি সুন্দরবন

প্রকৃতির অপার সৌন্দর্য এবং জীব বৈচিত্র্যের লীলাভূমি সুন্দরবন 1878 সালে স্যার উইলিয়াম হান্টার স্ট্যাটিসটিক্যাল একাউন্ট অফ সুন্দরবন নামে একটি সরকারি গেজেট সম্পাদনা করেন’ গেজেটের সুন্দরবনের উদ্ভিদবৈচিত্র্য এবং প্রাণীবৈচিত্র্য সম্পর্কে বিস্তারিত তুলে ধরেন, স্যার হান্টারের তথ্যমতে বেঙ্গল টাইগার চিতা বাঘ গন্ডার বুনো মহিষ বা শিঙ্গা হরিণ চিতল হরিণ হগ হরিণ মায়া হরিণ ছিল সুন্দরবনের প্রধান পানি সমূহ|

হুমকির সম্মুখীন হচ্ছে সুন্দরবনের এই প্রাণীকুল!

সুন্দরবন থেকে কমপক্ষে 29 প্রজাতির প্রাণী বিলুপ্ত হয়েছে

বর্তমানে সুন্দরবনে 32 প্রজাতির স্তন্যপায়ী 35 প্রজাতির সরীসৃপ 8 প্রকার উভচর ও 300 প্রজাতির প্রাণীর বসবাসের স্থল” কিন্তু ক্রমেই বিলুপ্তির হুমকির সম্মুখীন হচ্ছে সুন্দরবনের এই প্রাণীকুল গত 120 বছর সুন্দরবন থেকে কমপক্ষে 29 প্রজাতির প্রাণী বিলুপ্ত হয়েছে’

রয়েল বেঙ্গল টাইগার সহ 2 প্রজাতির উভচর 14 প্রজাতির সরীসৃপ 25 প্রজাতির পাখি এবং 5 প্রজাতির স্তন্যপায়ী প্রাণীদের বিলুপ্তি আশঙ্কা রয়েছে” যা নিঃসন্দেহে সুন্দরবনের জীব বৈচিত্রের জন্য অনেক বড় হুমকি’

এই বনটি বিশ্বের সর্ববৃহৎ ম্যানগ্রোভ!

বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলের এবং ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের দুইটি জেলা মিলে বিস্তৃত এই বনটি বিশ্বের সর্ববৃহৎ ম্যানগ্রোভ শ্বাসমূলীয় বনাঞ্চল’ ম্যানগ্রোভ এক বিশেষ ধরনের উদ্ভিদ যা সাধারণত সমুদ্র উপকূলবর্তী অঞ্চলের নোনা পানিতে জন্ম,

এদের প্রধান বৈশিষ্ট্য শ্বাসমূল কারণে যখন গাছগুলো অর্ধেক পানিতে ডুবে যায় তখন শ্বাসমূল মাটির উপরে ভেসে থাকে’শ্বাসমূল গুলোর মাথায় এক ধরনের শ্বাসছিদ্র থাকে যা দ্বারা জোয়ারের সময় ম্যানগ্রোভ গাছের শ্বাসনেয়|

চিতাবাঘ কে ইংরেজিতে লেফাট বলা হয়!

প্রথমে আসি চিতাবাঘের কথা’ চিতাবাঘ কে ইংরেজিতে লেফাট বলা হয় এর সবথেকে দ্রুতগতির প্রাণী চিতাবাঘ ঘন্টায় প্রায় 115 থেকে1 20 কিলোমিটার গতিতে দৌড়াতে পারে|

আকারে বাঘের থেকে ছোট লেফাট শিকারে অত্যন্ত দক্ষ এবং খিব্রো পুরো শরীর জুড়ে সোনালী রঙের মাঝে কালো কালো ছোপ থাকায় চিতাবাঘ দেখতে অত্যন্ত সুন্দর” এই চমৎকার প্রাণীটি একসময় আমাদের সুন্দরবনে বসবাস করত কালের বিবর্তনে বিলুপ্তি শুধু বাংলাদেশে নয় সারা পৃথিবী থেকে চিতাবাঘ হারিয়ে যাচ্ছে”

রাইনোসরস বা গন্ডার বিভিন্ন  প্রজাতির হয়!

রাইনোসরস সুদর্শনী প্রাণীটিকে বাংলা একসঙ্গে গন্ডার বলে ডাকা হয় রাইনোসরস সাদা কালো ইন্ডিয়ান জাভান  বিভিন্ন  প্রজাতির হয়’ তবে সুন্দরবনের শুধু এক সিংগি এবং জাভান গন্ডার বসবাস করত এক সিংগি গন্ডার তৃণভোজী হলেও অত্তন্ত রাগী স্বভাবের”

সুদর্শনী  এই প্রাণীটি অনেক আগেই সুন্দরবন থেকে বিলুপ্ত হয়ে গিয়েছে অনেকেই মনে করেন বাংলার বারো ভূঁইয়াদের অন্যতম রাজা প্রতাপাদিত্য গন্ডার বিলুপ্ত হওয়ার জন্য অনেকাংশে দায়ী কথিত আছে তার 5000 পদাতিক সৈন্য দলের জন্য গন্ডারের চামড়া দিয়ে ঢাল তৈরি করেছিলেন”

যে কারণে প্রচুর গন্ডার হত্যা করা হয়েছিল বিষয়টি একদম উড়িয়ে দেয়া যায় না কারণ পুরো সুন্দরবনের ছিল রাজা প্রতাপাদিত্যের রাজ্যের অংশ|

বুনো মোষ বড়শিং বিশিষ্ট শক্তিশালী স্তন্যপায়ী প্রাণী!

ওয়ার্ল্ড ওয়েটার বাফেলো বা বুনো মোষ বড়শিং বিশিষ্ট শক্তিশালী স্তন্যপায়ী প্রাণী বুনো মোষ এদের গায়ের রঙ হালকা ধূসর কালো হয়ে থাকে’ যদিও গৃহপালিত মহিষ খুব শান্ত  এবং নিরীহ হয়ে থাকে কিন্তু বন্য মহিষ গুলি খুবই আক্রমণাত্মক এবং ক্ষেপাটে স্বভাবের হয়ে থাকে|

মানুষের প্রধান শত্রু বাঘ এবং সিংহ কারণ এই দুটি প্রাণীর বুনো মোষ  খেতে পছন্দ করেন তবে বুনো মোষ  খুবই সাহসী প্রাণী এরা সবসময় বাঘ এবং সিংহের সাথে বুক সিটিয়ে লড়াই করে” প্রয়োজনে এরা ঘণ্টায় 30 কিলোমিটার গতিতে দৌড়াতে পারে এদের দুধ খুবই সুস্বাদু এবং পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ হয়” দুঃখের বিষয় বুনো মোষ এখন আর সুন্দরবনের দেখতে পাওয়া যায় না|

ফারা হরিণ আরেকটি দৃষ্টিনন্দন প্রাণী!

ফারা হরিণ সুন্দরবন থেকে বিলুপ্ত হওয়ার আরেকটি দৃষ্টিনন্দন প্রাণী ফারা হরিণ ঝোপের ভিতর দিয়ে শকুনের মত মাথা নিচু করে দৌড়ায় তাই এদের হক গিয়ার ও বলা হয়” এরা তেমন দলবদ্ধ হয়ে থাকতে পছন্দ করেনা ফারা হরিণের মাথায় গাছের ডালের মতো খুব চমৎকার শিং  আছে ফারা হরিণ বনে ঘাস লতাপাতা খেলেও এদের সব থেকে প্রিয় খাবার খেতে শস্য”

এ কারণে ফারা হরিণ জঙ্গল থেকে বের হয়ে প্রায় ফসলি জমিতে চলে আসতো যখনি তা কৃষকদের নজরে আসেতো তখনি তারা হরিণ মেরে ভোজের আয়োজন করতো’  এর ফলে ধীরে ধীরে কমতে শুরু করে ফারা হরিণ বা হক ডিয়ার

বাংলাদেশ ছাড়াও পাকিস্তান ভারতের উত্তরাঞ্চলীয় দক্ষিণ-পশ্চিম মায়ানমার হরিণটির জন্মগত আবাসভূমি তবে বর্তমানের সুন্দরবন থেকে ফারা হরিণ বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়েছে|

বারশিঙ্গা হরিণ একসময় সুন্দরবনের দেখা যায়!

বারশিঙ্গা হরিণ একসময় সুন্দরবনের হরিণ থাকলেও এখন এদের আর দেখা যায় না চমৎকার বৈচিত্র্যপূর্ণ শিংহের কারণে প্রজাতির হরিণ খুবই দৃষ্টিনন্দন’ এবং জনপ্রিয় বারশিঙ্গা হরিণের শিং 12টি চোখা প্রান্ত থাকার কারণে প্রজাতিটি নামকরণ করা হয়েছে বারশিঙ্গা|

কিন্তু হরিণ বেদে 10 থেকে 16 টি চোখা প্রান্ত থাকতে পারে  জলাভূমি তৃণময় সমভূমি ভাসমান তৃণঅঞ্চল বারশিঙ্গা হরিণের প্রিয় আবাসস্থল” যদি কোথাও বারশিঙ্গা হরিণ দেখতে পান তাহলে নির্দ্বিধায় বুঝে নিবেন আশেপাশে কোথাও জলাশয় আছে|

বারশিঙ্গা হরিণ এর রং হালকা কালচে বাদামি হলুদাভ-বাদামি ধূসর ও হয়ে থাকে অপেক্ষাকৃত ঠান্ডার দিন গুলিতে এরা পাল ধরে বিচরণ করতে পছন্দ করে” ঘাসে এদের প্রধান খাদ্য তবে কখনো কখনো গাছের পাতা ফল এবং ফুলের খেয়ে থাকে”

বনু সাষ খুবই বৈচিত্র্যপূর্ণ এবং জনপ্রিয় একটি প্রাণী!

বনু সাষ খুবই বৈচিত্র্যপূর্ণ এবং জনপ্রিয় একটি প্রাণী স্থান ভেদে এদের গঠন বেশ পরিবর্তন হয়ে থাকে এশিয়া এবং উত্তর আমেরিকার বনু সাষরের মাঝে বিস্তর পার্থক্য লক্ষ্য করা যায়’ তবে বাংলাদেশের অনেকের কাছে প্রাণীটি গয়েল নামে পরিচিত|

গয়াল টিনবুঝি হওয়ায় গহীন বনে ঝোপঝাড়ের কচিপাতা ও ডালপালা খেয়ে বেঁচে থাকে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই বনু গয়াল দলবদ্ধভাবে বাস করে” দলের নেতৃত্ব থেকে একটি বড় শক্তিশালী সাষ কালের বিবর্তনে বনু সাষ সুন্দরবন থেকে  বিলুপ্ত হয়ে গিয়েছে

নীলচামড়ার এক গরুর ছবি!

নীলগাই শুনলে মাথায় আসে নীলচামড়ার এক গরুর ছবি কিন্তু নীলগাইয়ের নামে গাই যুক্ত থাকলেও এরা বাস্তবে কোন গরু বা গরু জাতীয় প্রাণী নয়” এরা হরিণ জাতীয় প্রাণী নীলগাই হরিণ জাতের প্রাণী গুলোর মধ্যে আকারে সবচেয়ে বড় এদের খাবারের তালিকায় ঘাস লতাপাতা গোলময় ইত্যাদি তৃণজাতীয় খাদ্য রয়েছে|

তাই এসব খাবারের প্রাচুর্য রয়েছে এমন জঙ্গলে বা জলাভূমির দিকে নীলগাইদের বেশি দেখা যায় এবং বাদামী রঙের প্রাণীগুলো গাড় সবুজ অরণ্যে খুবই দৃষ্টিনন্দন” একসময় নীলগাই সুন্দরবন তথা সমগ্র বাংলাদেশের বিচরণ করত তবে 980 সালের পর থেকে প্রাণীটিকে আর বাংলাদেশে দেখা যায়নি,

পরবর্তীতে 2018 সালের 4 সেপ্টেম্বর বাংলাদেশের ঠাকুরগাঁও জেলার রাণীশংকৈল উপজেলার কুলিক নদীর ধারে পুনরায় একটি নীলগাইহের সন্ধান মিলেছিল|

মেছো বাঘের পরিচিত!

ফিশিংক্যাট বাংলায় মেছোবাঘ বা মেছোবিড়াল নামে পরিচিত মেছো বাঘের গায়ের রং জলপাইসবুজ পুরো শরীর জুড়ে কালো ফড ফড এবং মেরুদন্ডের কাছে কালো ডোরাকাটা থাকে”

তাই দূর থেকে মেছোবাঘকে অনেকসময় চিতা বাঘের মত দেখায় এই চমৎকার প্রাণীটি আকারে কুকুরের সমান তবে বেশ তাগড়া|

প্রিয় খাবার ছোট জাতের বন্যপ্রাণী মাছ শিকার করে খাওয়াও হারি পছন্দ আগে সুন্দরবনসহ বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রান্তে মেছোবাঘের দেখামিল তো, তবে বিগত কয়েক দশকে মেছো বাঘের সংখ্যা মারাত্মকভাবে হ্রাস পেতে পেতে শূন্যের কোঠায় এসে দাঁড়িয়েছে”

বন উজাড় করে জনবসতি স্থাপন কৃষিজমিতে রূপান্তর সহ আরো বিভিন্ন কারণে মেছো বাঘ বসবাসের উপযুক্ত জায়গা নষ্ট হয়ে যাওয়া এই বিলুপ্তির কারণ মনে করা হয়’ 2008 সালে আইইউসিএন মেছো বাঘকে বিপন্ন প্রজাতির তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করে|

সুন্দরবন থেকে বিগত 120 বছর বিলুপ্ত হয়েছে!

এছাড়াও সুন্দরবন থেকে বিগত 120 বছর বিলুপ্ত হয়েছে নেকড়ের ভদার কুমির এর মত প্রাণী এমন কি অনেক পাখিও বিলুপ্ত হয়েছে,

সেই তালিকায় আছে ময়ূর সাদা মানিকজোড় মোছাহাস গগন বের চলারতিথির এর মত দৃষ্টিনন্দন পাখি আর বিলুপ্তির হুমকিতে আছে আরো বেশ কিছু প্রাণী, এসব প্রাণী বিলুপ্তি পেছনে মানুষের ভূমিকাই প্রধান অনিয়ন্ত্রিত উপায় বনভূমি উজাড়, বনের ভেতর দিয়ে বাণিজ্যিক জাহাজ চলাচল করার কারণেই নষ্ট হচ্ছে বোনের বাস্তুসংস্থান|

{-আসসালামু আলাইকুম আপনাদের অনেক ধন্যবাদ আপনারা অনুগ্রহ করে আমার ওয়েবসাইটে এসে ভিজিট করার জন্য l আমি অনুগ্রহ করে আপনাদের কাছ থেকে লাইক কমেন্ট শেয়ার আশা করি -}

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন