পাকিস্তানের করাচিতে 20 লাখ বাঙালির মীরজাফর বলে লাঞ্ছনার শিকার
পাকিস্তানি সমাজের সর্বস্তরে ঘৃণা বৈষম্য ও নির্যাতনের শিকার হয় |
ক্লিক হেয়ার
পাকিস্তানের করাচিতে
20 লাখ বাঙালির দুখে দুখে বেঁচে আছে আজ মীরজাফর বলে চরম লাঞ্ছনার শিকার’ করাচি পাকিস্তানের
বন্দর শহর পাকিস্তানের সাবেক রাজধানী এবং বর্তমানে অলিখিত অর্থনৈতিক রাজধানী পাকিস্তানের
সবচেয়ে ঘনবসতিপূর্ণ শহর’ দ্য ইকোনমিক ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের 2017 সালে করা এক সমীক্ষায়
দাবি করা হয় পৃথিবীর সবচেয়ে বিপজ্জনক শহর হল পাকিস্তানের করাচি|
করাচি ইউনিভার্সিটি থেকে বাংলা মাস্টার্স করা যায়!
করাচি শহরে বাস করেন প্রায় 20 লাখ বাংলাভাষী মানুষ |
করাচি ইউনিভার্সিটি
থেকে বাংলা মাস্টার্স করা যায় করাচি বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগে পড়ানো হয়’রবীন্দ্রনাথের
গোরা নজরুলের অগ্নিবীণা থেকে জসীম উদ্দিনের নকশী কাঁথার মাঠ,
পড়ানো হয় হুমায়ূন
আহমেদের সুনীল শক্তি মানি ও এক সময় কওমি বন্ধন,এবং মুক্তি নামে বাংলা ভাষায় দৈনিক
সংবাদপত্র বের হতো পাকিস্তানের করাচি থেকে তাই করাচিকে মিনি বাংলাদেশে বলে থাকেন পাকিস্তানের
মানুষ”
করাচির মারছি,
বাঙালি কলোনি, বাংলা বাজার, চিটাগং কলোনি,মুছা কলোনি, ইব্রাহিম হায়দারের মত পায়
132টি বাঙালি কলোনি আছে করাচির আশেপাশে, এত বাঙালি করাচিতে এলেন কোথা থেকে
ব্রিটিশ আমলে মাছ ধরার কাজে বাঙালি পারদর্শিত!
সময়টা ছিল বিংশ শতাব্দীর প্রথম ভাগ |
করাচিতে বাঙালিরা প্রথম আসেন কিন্তু ব্রিটিশ আমলে মাছ ধরার কাজে বাঙালি পারদর্শিতার জন্য বর্তমান বাংলাদেশের সমুদ্র উপকূলবর্তী অঞ্চল থেকে জেলেদের নিয়ে যান করাচির উর্দুভাষী ব্যবসায়ীরা,সমুদ্রের ধারে জেলেদের কলোনি গড়ে দেন,
সময়টা ছিল বিংশ
শতাব্দীর প্রথম ভাগ এই বাঙালির মৎস্যজীবীরা দ্রুত করাচির উর্দু ভাষা বাসিন্দাদের সংস্কৃতির
সঙ্গে খাপ খাইয়ে নেন দ্রুত সেখানে উর্দু ভাষা বাংলা ভুলেন না|
পরবর্তী সময়ে
ভারতের স্বাধীনতার পর পূর্ব পাকিস্তান থেকে প্রচুর সংখ্যায় বাঙালি করাচিতে আসে পাকিস্তানের
হাত থেকে 1971 সালে বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর পাকিস্তান থেকে বেশকিছু বাঙালি বাংলাদেশে
ফিরে আসেন কিন্তু বেশিরভাগই থেকে যান করাচিতে|
বাংলাদেশী ওই
সময় টাকার তুলনা পাকিস্তানের মুদ্রার দাম দ্বিগুণ ছিল!
তাছাড়া এই পল্লীর
প্রায় অর্ধেক জনসংখ্যা চাকরির জন্য 80-90 দশকে বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে এসেছে
যাদের অধিকাংশই দেশপ্রেমী বাংলাদেশী ওই সময় টাকার তুলনা পাকিস্তানের মুদ্রার দাম দ্বিগুণ
ছিল|
এই পল্লীর 96
শতাংশ বাসিন্দাই সহপরিবারে আছে যাদের অধিকাংশই বাসিন্দা খুলনা ও কুমিল্লা অঞ্চলের বাসিন্দা,
এছাড়াও পারমীজ বুদ্ধদের হাত থেকে বাঁচতে 5 লক্ষ রোহিঙ্গা সমুদ্র পথে বা চোরাপথে করাচিতে
এসে উঠেন|
1995 সালে পাকিস্তানের
বাংলাভাষী সংখ্যা দাঁড়ায় প্রায় 25 লাখ এর মধ্যে করাচিতে প্রায় 20 লাখ ভারতের করাচিতে
এসেছেন প্রায় এক কোটি হিন্দি উর্দুভাষী মুসলিম, 1971 সালের আগে করাচিতে বাঙালি তবু
ও ভালো ছিলেন,
ভারত ছেড়ে পাকিস্তানকে
আপন করেছিলেন বলে পাকিস্তান পুরোপুরি না হলেও কিছুটা আপন করে নিয়েছিল বাংলাভাষীদের,
কিন্তু 1971 সালে পাল্টে দিল সব ভারতের সঙ্গে পূর্ব পাকিস্তানের বাঙালিরা তৈরি করলেন
স্বাধীন বাংলাদেশে কপাল পুড়লো পশ্চিম পাকিস্থানের থাকা বাঙ্গালীদের|
দিনের মধ্যে 20
ঘন্টা বিদ্যুৎ সংযোগ থাকে না!
সেই থেকে তার
পাকিস্তানি মির্জাপর পাকিস্তানি সমাজের সর্বস্তরে ঘৃণা বৈষম্য ও নির্যাতনের শিকার হয়ে
ছলে ছেন পাকিস্তানকে আপন ভাবা এর মানুষগুলি, বংশ পরম্পরা পাকিস্তানের থেকে আজও বাংলাভাষীদের
পাকিস্তান জাতীয় পরিচয়পত্র মেলে না নাগরিকত্বের তো দূরের কথা|
ওয়ার্ক পরমিট
নিয়ে কাজ করতে হয় তাও নিতে হয় অনেক টাকা ঘুষ দিয়ে বাস করতে হয় গেঞ্জি বস্তিতে
চারিদিকে নোংরা জল ও আবর্জনার মধ্যে, দিনের মধ্যে 20 ঘন্টা বিদ্যুৎ সংযোগ থাকে না পানী
বা জল আসে দিনে একবার,
এলাকার বাইরে
বের হলে পুলিশি ঝামেলা লেগেই থাকে করাচির মহস্বলে পাকিস্তানের বেঙ্গলি একশন কমিটি নামে
বাঙালির একটি সংগঠন সংক্রিয়,
তাদের কাছ থেকে
জানা যায় জাতীয় পরিচয় পত্র মেলে না বলে পাকিস্তানের বাঙালিরা উচ্চশিক্ষা এবং সরকারি
চাকরি পানা জমিজমা বাড়ি কিনতে পারেন না ভাড়া নিয়ে থাকতে হবে,
নামমাত্র পয়সায়
দিনমজুরের কাজ করতে হয় অধিকাংশ বাঙালিকে!
উচ্চশিক্ষা না
থাকার ফলে ছোটখাটো কাজে লেগে যাচ্ছে নবীন প্রজন্মের বাঙালি এরা কেউ রাস্তার পাশের সবজি
বেচেন কেউ চায়ের দোকানে বা কেউ মুদি দোকানে কাজ করেন, কেউ জীবনের ঝুঁকি নিয়ে গভীর
সমুদ্রে মাছ ধরতে জান,
বেশির ভাগই কলোনির
বাইরে খুব একটা বাইর হনা ফলে কলোনির ভিতর পাঠান আফগানিদের ছোটখাটো ফ্যাক্টরিতে নামমাত্র
পয়সায় দিনমজুরের কাজ করতে হয় অধিকাংশ বাঙালিকে
অথচ করাচির মৎস্য
শিল্প দাঁড়িয়ে আছে বাঙালি শ্রমিকদের উপর পাকিস্তানি ব্যবসায়ীরা সস্তা শ্রমিক ফান
তাই তারা চান না বাঙালিরা পাকিস্তান ছেড়ে চলে যাক’
বাঙালি গত 40-50 বছর ধরে করাচিতে বাস করছ!
কিন্তু বাঙ্গালীদের
নাগরিকত্ব বা তাদের জীবনযাত্রার মান উন্নয়নের জন্য তারা আদৌ চিন্তিত নয় সম্প্রতি
প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান অবশ্য বলেছেন অনেক আফগান এবং বাঙালি গত 40-50 বছর ধরে করাচিতে
বাস করছ’
এখানে তাদের সন্তানরা
জন্মেছে ইনশাআল্লাহ আমরা তাদের জাতীয় পরিচয় পত্র এবং পাসপোর্ট দেবো কিন্তু পাকিস্তানের
বাঙালি রাজনৈতিক নেতাদের চাপে পড়ে আর ডলতে রাজি নন,
তাই করাচির বেশিরভাগ
বাঙালি নেমেছেন অধিকার আদায়ের আন্দোলনে একই তো পাকিস্তানের অর্থনৈতিক মন্দা এবং অন্যদিকে
পুলিশি নির্যাতনে বৈষম্য অতিষ্ঠ হয়ে বাঙালির পরিবারগুলো বাংলাদেশের ফিরে যেতে শুরু
করেছেন,প্রতিদিনই করাচির বাংলাদেশী কনস্যুলেটে গিয়ে নিজের দেশের ভিসার জন্য বাঙালিরা
বির করছে
তাছাড়াও করাচিতে
ছিলেন 6 থেকে 7 লাখ আফগানি হাজার পাঁচেক ইরানি নেপালি শ্রীলংকা এবং ফিলিপিনো সুতরাং
জীবিকার তাগিদে অস্তিত্ব রক্ষার্থে করাচিতে শুরু হয়ে গিয়েছিল জায়গা দখলের লড়াই
করাচির বাঙালিরা
ভোটধিকার নাই!
ভারত থেকে আগত
উর্দুভাষী বাঁশি মুহাজির জনগোষ্ঠীর পরেই জনসংখ্যার দিক থেকে শক্তিশালী হয়ে উঠেছিল
বাংলাভাষী বাঙালি জনগোষ্ঠীর করাচি ক্রমশ বেড়ে যেতে শুরু করেছিল ভূমিপুত্রদের হাত থেকে
তাই বেনজির ভুট্টো পাকিস্তানের বাংলাদেশ হঠাও অভিযান শুরু করে
বেনজির ভুট্টো
অতি সক্রিয় ও তার পেছনে আরেকটি কারণ খুঁজে পান সমালোচকেরা সেটি হল ভোটধিকার না থাকলেও
করাচির বাঙালিরা বেশিরভাগই পাকিস্তানি মুসলিম লীগের সমর্থকদের
জেটি গেঞ্জির
ভুট্টো পাকিস্তান পিপলস পার্টি এর প্রধান বিরোধী দল বেনজির ভুট্টো সরকার পাকিস্তান
থেকে বিমানে করে বেশ কিছু বাঙ্গালীকে পাঠিয়ে দেন বাংলাদেশের
2 বিমানকে পত্র
দিয়ে পাঠিয়ে দিয়েছিলেন পাকিস্তানের!
যা নিয়ে বেনজির
ভুট্টো পাকিস্তানের সঙ্গে খালেদা জিয়ার বাংলাদেশের সম্পর্কে চূড়ান্ত অবনতি ঘটে ছিল
খালেদা জিয়া পাকিস্তান থেকে পাঠিয়ে দেয়া 2 বিমান বাংলাদেশি শরণার্থীদের নিতে অস্বীকৃতি
জানিয়ে ছিলেন
2 বিমানকে পত্র
দিয়ে পাঠিয়ে দিয়েছিলেন পাকিস্তানের ইতিমধ্যে পাকিস্তান মুসলিম লীগ এবং ধর্মীয় সংস্থাগুলো
বেনজির ভুট্টো এই আজকে ইসলাম বিরোধী বলে আন্দোলনে নেমে পড়েছিল ফলে বেনজির ভুট্টোকে
বাংলাদেশী হাটা অভিযান পিছে আসতে হয়েছিল
পাকিস্তানের মানব
অধিকার কমিশনের প্রাপ্ত চেয়ারম্যান আসাদ ইকবাল কানের বাঁধ একবার বিবিসিকে বলেছিলে
বাঙ্গালীদের মর্মান্তিক অবস্থার কথা তিনি বলেছিলেন, একজন অবাঙালি পাকিস্তানি শ্রমিক
যেখানে মাসে 12 থেকে 13 হাজার রুপি মজুরি প্রাণ একজন বাঙালি শ্রমিক প্রাণ তার অর্ধেক’
পাকিস্তানের বাঙ্গালীদের
জীবনযাত্রার 100 বছরেও উন্নত না হওয়ার কারণ!
বাঙালি মেয়েরা
কারখানা এবং লোকের বাড়িতে কাজ করতে গিয়ে শুধু যে পয়সা কম তা নয় অনবরত যৌন শোষণের
শিকার হচ্ছেন তারা, পাকিস্তানের বাঙ্গালীদের জীবনযাত্রার মান 100 বছরেও উন্নত না হওয়ার
কারণ হল বাঙ্গালীরা পাকিস্তানের নাগরিক নয়’
যেহেতু নাগরিক
নন তাদের ভোটাধিকার নেই যেহেতু ভোটাধিকার নেই সুতরাং পাকিস্তানের রাজনীতিদের কাছে বাঙ্গালীদের
কোন দাম নাই