ব্রিটিশ সাম্রাজ্য পৃথিবীর ইতিহাসের সবচেয়ে জুলুমের রাজত্ব ভারত বর্ষ
ব্রিটিশ সাম্রাজ্য |
বর্তমান যুক্তরাজ্যের
অধীনে থাকা পৃথিবীর বিভিন্ন
অঞ্চলের প্রশাসনিক এলাকাগুলো ব্রিটিশ সাম্রাজ্য হিসেবে পরিচিত ছিল
একসময় ব্রিটিশরা পৃথিবীর মোট আয়তনের 4 ভাগের
এক ভাগ অঞ্চল এবং
পৃথিবীর মোট জনসংখ্যার তিন
ভাগের এক ভাগ মানুষকে
সরাসরি শাসন করতো, ছোট্ট
একটি দ্বীপরাষ্ট্র
ব্রিটেনের তাদের কুট-পরিকল্পনার
মাধ্যমে গড়ে তুলেছিল পৃথিবীর
ইতিহাসের সবচেয়ে বড় ব্রিটিশ সাম্রাজ্য’
আর সে কারণেই বলা হতো ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের সূর্য কখনো অস্ত মিলন হয়না ব্রিটিশ সাম্রাজ্য ও ভারতীয় উপমহাদেশে তাদের কুখ্যাত শাহনামা’
টানা
200 বছর ব্রিটিশ শক্তিশালী জাতি হিসেবে বিশ্ব
শাসন করেছে!
ভারতের দুর্ভিক্ষে |
সেসব প্রতিষ্ঠানের মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য
হলো ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি
পরবর্তীতে টানা 200 বছর ব্রিটিশ সবচেয়ে শক্তিশালী জাতি হিসেবে বিশ্ব
শাসন করেছে, ব্রিটিশরা তাদের আধুনিক
দৃষ্টিভঙ্গির কারণে উপনিবেশ শাসনের
ক্ষেত্রে অন্যান্য ইউরোপীয়দের ছেয়ে গিয়েছিল,
ব্রিটিশ
সাম্রাজ্যের আয়তন তিন কোটি
37 লক্ষ বর্গ কিলোমিটার!
তাদের সবচেয়ে শক্তিশালী হাতিয়ার ছিল তৎকালীন সময়ের সবচেয়ে আধুনিক বাণিজ্য ও সামরিক জাহাজ এছাড়া উপনিবেশগুলোতে শিক্ষাব্যবস্থা যাতায়াত ব্যবস্থা এবং তারের সাহায্যে দ্রুত যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে তোলার কারণে নিজেদেরকে আধুনিক শাসক হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে পেরেছিল|
কানাডা থেকে ইন্ডিয়া
থেকে অস্ট্রেলিয়া থেকে নাইজেরিয়া থেকে ক্যারিবিয়ান
থেকে দক্ষিণ আফ্রিকা পর্যন্ত বিস্তৃত অঞ্চল দখলের মাধ্যমে তারা পৃথিবীর ইতিহাসের
সবচেয়ে বড় সাম্রাজ্যে প্রতিষ্ঠা
করেন, ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের আয়তন ছিল তিন
কোটি 37 লক্ষ বর্গ কিলোমিটার
যা পৃথিবীর মোট আয়তনের 4. এক
ভাগ,
ধর্ম চর্চা!
বাণিজ্যের উদ্দেশ্যে ব্রিটিশ রা সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়লে ও তাদের আরেকটি ব্রত ছিল ধর্ম প্রচার করা নিজেরা সকল ধরনের ধর্ম চর্চা করলেও তাদের ভাবখানা এমন যেন তারা সরাসরি ঈশ্বর কর্তিক নির্বাচিত শাসক’
ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের সবচেয়ে আকর্ষণীয় ঔপনিবেশ ছিল ভারত বর্ষ ভারতের কর্তৃত্ব লাভ করার কারণে ইউরোপের অন্যান্য ঔপনিবেশিক শক্তি ব্রিটিশদের রীতিমতো ঈশ্বর করত’ 17 শতকের মাঝামাঝি ব্রিটিশরা ভারতের খুব ছোট কিছুর সমুদ্র তীরবর্তী এলাকার শাসন করতে শুরু করে কিন্তু 18 শতকের মধ্যেই তারা ভারতীয় উপমহাদেশের সিংহভাগ অঞ্চল দখল করে নেয়,
ব্রিটিশ উপমহাদেশ গ্রাস করে ফেল প্রায় 600 কোটি রাজ্য দখল করে!
ব্রিটিশ মূলত ভারতীয় উপমহাদেশের কর্তিত গ্রহণ করেছে এই অঞ্চলের বিভিন্ন স্থানীয় শাসকদের সহায়তায় প্রথমদিকে তারা ক্ষুদ্র নৃপ্রতি বা রাজাদের হয়ে অন্য রাজাদের বিরুদ্ধে লড়াই করেছে,
যাতে বলেন Proxy War এরপর ভারতবর্ষের শাসকরা একসময় দেখতে পায় তারা নিজেরা
নিজেদের সাথে লড়াই করতে
করতে ততদিনে ব্রিটিশ উপমহাদেশ
গ্রাস করে ফেলেছে’
ব্রিটিশরা তাদের কুট চক্রান্তের বলে ভারত মহাসাগরের দ্বীপ থেকে হিমালয় পর্যন্ত ছোট-বড় মিলিয়ে প্রায় 600 কোটি রাজ্য দখল করতে সক্ষম হয় এই উপমহাদেশের মূল্যবান কাপড় চা এবং মসলা ইউরোপ সহ পৃথিবীর অন্যান্য অঞ্চলে বিক্রির মাধ্যমে ব্রিটিশরা সবচেয়ে বেশি লাভবান হয়েছে,
ভারতীয়
ব্রিটিশদের কাছে ছিল সোনার
ডিম পাড়া হাঁসের মতো!
এছাড়াও উপমহাদেশের জনগণের কাছ থেকে কর গ্রহণের মাধ্যমে তারা হাতিয়ে নিয়েছে বিপুল পরিমাণ অর্থ’ ভারতীয় উপমহাদেশে ব্রিটিশদের কাছে ছিল সোনার ডিম পাড়া হাঁসের মতো’ 1765 সালের পর থেকে নানা উপায়ে ব্রিটিশরা ভারতীয় সাধারন জনগনের কাছ থেকে কর সংগ্রহ করতে শুরু করেন’
সেই করের টাকা দিয়েই ব্রিটিশরা তাদের ব্যবসার জন্য স্থানীয় পণ্য সামগ্রী কিনতে থাকে অর্থাৎ ভারতে ব্যবসা করতে এসে ভারতীয় জনগণের কাছ থেকে কর আদায় করে সেই টাকায় তারা ব্যবসার মূলধন হিসেবে ব্যবহার করে, এ ছাড়া ইউরোপের বাজারে ভারতীয় পণ্যের ব্যাপক চাহিদা থাকায় সেসব পণ্য তার দ্বিগুণ দামে বিক্রি করতো|
ভারতবর্ষ
থেকে সংগ্রহীত পণ্য ব্রিটিশদের ব্যবসার জমে ওঠে অভাবনীয় পাওয়া যায় সেই
সাথে নিজেরা কোন পণ্য
উৎপাদন না করেও ইউরোপের
বাজারে তারা সবচেয়ে বড়
পুঁজিপতি বলে যায়’
ব্রিটেনে শিল্প
বিপ্লবের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয়
লোহা আলকাতরা গাছের গুড়ি বিপুল
পরিমাণে ভারত থেকে পাচার
করে নিয়ে যায় একদিকে
ভারতের অর্থ অন্যদিকে খনিজ
ও প্রাকৃতিক সম্পদ লুটপাটের মাধ্যমে
ব্রিটিশরা তাদের
শিল্প বিপ্লব ঘটায়’
শুধু তাই নয় ভারতের লুনটিথ সম্পদ দিয়েই ব্রিটিশরা কানাডা অস্ট্রেলিয়া সহ অন্যান্য অঞ্চলের উপনিবেশ গুলোতে শিল্পায়নের বিনিয়োগ করেন, একটি গবেষণায় জানা যায় 1765 থেকে 1938 সালের মধ্যে 45 ট্রিলিয়াম মার্কিন ডলার মূল্যের সম্পদ ব্রিটিশরা ভারত থেকে পাচার করে নিয়ে গেছে’ এই 45 ট্রিলিয়াম মার্কিন ডলার বর্তমানে যুক্তরাজ্যের জিডিপির প্রায় 17 গুণ বেশি,
তৃতীয় বিশ্বের দেশ বলে আজ তারা তাচ্ছিল্যের দৃষ্টিতে দেখছে!
ব্রিটিশ শিক্ষাব্যবস্থায় তাদের এই লুটতরাজের কোন পাঠ দেওয়া হয় না সারা বিশ্বব্যাপী অন্যায় আর শোষণ এর মাধ্যমে তারা সম্পদ গড়ে তুলেছে তার কোনো সঠিক বিবরণ নেই’ তাদের পাঠ্য পুস্তকের তৃতীয় বিশ্বের দেশ বলে ব্রিটিশ যাদেরকে নিয়ে আজ তাচ্ছিল্যের দৃষ্টিতে দেখছে’
অথচতারা
জানিনা তাদের পূর্বপুরুষ এসব
পরিবেশকে ইচ্ছাকৃতভাবে দারিদ্র্যসীমার নিচে ঢেলে দিয়েছে
বরং ব্রিটিশ উপনিবেশের আভিজাত্য তুলে ধরে তাদের
বিদ্যালয়গুলোতে’
যার ফলে এখন অধিকাংশ ব্রিটিশ তাদের উপনিবেশিক অতীত নিয়ে গর্ববোধ করে ব্রিটেনেরে বহু নাগরিক এখনো মনে করে ব্রিটিশ শাসনের ফলে উপনিবেশগুলো লাভবান হয়েছে’ 2014 সালের একটি জরিপে দেখা যায় 43 শতাংশ ব্রিটিশ মনে করে ব্রিটিশ সাম্রাজ্য একটি ভালো ব্যাপার ছিল,
যেখানে মাত্র 19 শতাংশ ব্রিটিশ মনে করে ব্রিটিশ উপনিবেশ গুলো খারাপ ছিল আর 25 শতাংশ বলেছে ব্রিটিশ সাম্রাজ্য ভালো ছিল না আবার খারাপও ছিল না’ সমালোচকদের দাবি ব্রিটিশরা তাদের উপনিবেশগুলোতে গণহত্যা দুর্ভিক্ষ এবং নির্যাতন নিপিরিণের মত ঘৃণ্ সব ঘটনা ঘটিয়েছে|
ভারতের দুর্ভিক্ষে
মারা যায়!
ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের অধীনে থাকালে বিভিন্ন দুর্ভিক্ষে ভারতের প্রায় 1 কোটি 20 লাখ থেকে 2 কোটি 90 লাখ মানুষ মারা যায়’ অথচ একই সময়ে ভারত থেকে বছরে লাখ টন গম পাচার ব্রিটেনে’
1943 সালে
বাংলায় যে ভয়াবহ দুর্ভিক্ষ
হয়েছিল তাতে শুধু মারা
যায় 40 লাখ মানুষ অথচ তৎকালীন
ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী উইনস্টন চার্চিল সেই সময় বাংলায় উৎপাদিত
খাদ্যশস্য ব্রিটিশ সেনাদের জন্য সরবরাহ করতে আদেশ দিয়েছিল’
উইনস্টন
চার্চিল বলে ভারতীয়রা অসংখ্য
সন্তান জন্মদেয়!
উইনস্টন চার্চিল বাংলার ওই দুর্ভিক্ষের সম্পর্কে বলেছিল আমি ভারতীয়দের ঘৃণা করি কারণ তারা মানুষ নয় পশুর মত আর তাদের ধর্ম পাশবিক এই দুর্ভিক্ষের জন্য তারা নিজেরাই দায়ী’ কারণ খরগোশের মত অসংখ্য সন্তান জন্ম দিয়ে দ্রুত জনসংখ্যা বাড়ানোর ফলে খাদ্যের অভাবে এই দুর্ভিক্ষেরদেখা দিয়েছে|
ভারতবর্ষে মানুষের প্রদত্ত কর যদি মানুষের কল্যাণে ব্যয় করা হতো তাহলে কয়েক শত বছর ধরে এ অঞ্চলের মানুষের দারিদ্র্যের সাথে লড়াই করে টিকে থাকতে হতনা’
ব্রিটিশ আজ ভারতবর্ষের তৃতীয় বৃহৎ সাম্রাজ্য হবার পরও তারা এই অঞ্চলের জন্য কোন কল্যাণ বয়ে আনতে পারেনি অতীতে ভারতীয় উপমহাদেশের সবচেয়ে বড় সাম্রাজ্য ছিল মৌর্য সাম্রাজ্যের’ আর ভারতীয় উপমহাদেশের তৃতীয় বৃহৎ সাম্রাজ্যের ছিল ব্রিটিশদের ঠিক আগে শাসন করা মুকুলদের সাম্রাজ্যের’
কাবুলে সিংহাসনের এর আরোহণের মাধ্যমে যে মুকুলদের যে যাত্রা শুরু হয়েছিল ভারতবর্ষে সিংহভাগ অঞ্চল অন্তর্ভুক্তির মধ্য দিয়ে তার চূড়ান্ত রূপ লাভ করে শিল্প-সংস্কৃতি অভিনন্দন শাসনব্যবস্থা ও মুকুলদের সাম্রাজ্যের জন্য বিখ্যাত|