কি ভয়ংকর শাওলিন কুংফু |
প্রচলিত
ভুল ধারণা হলো কুংফু
কারাতে একই জিনিস মনে
করি!
কুংফু হলো চাইনিজ এবং কারাতে হল জাপানিজ |
কিন্তু বিষয়টি মোটেও
তা নয় কুংফু হলো
চাইনিজ এবং কারাতে হল
জাপানিজ কারাতে শব্দের অর্থই
হলো খালি হাতে অন্যদিকে
কুংফু খালি হাতেও হতে
পারে আবার বিভিন্ন ধরনের
হাতিয়ার ব্যবহার করে হতে পারে
কুংফু কারাতে ছাড়াই ও জুডো তায়কোয়ান্দোর মতো আরও নানান ধরনের মার্শালাট রয়েছে এদের প্রত্যেকটি আছে নিজস্ব বৈশিষ্ট্য চীনা এবং জাপানি সকল মার্শাল আর্ট এর মধ্যে সবচেয়ে প্রভাবশালী হল কুংফু’
তৎকালীন
সম্রাট জিয়াওয়েন তার গুণমুগ্ধ ছিল!
সবচেয়ে ভয়ংকর শাওলিন কুংফু |
সেইখান থেকে বুদ্ধধর্ম চেন বা জেন শাখার উৎপত্তি ঘটে চেন বা জেন শব্দ দুটি সংস্কৃত দেন শব্দ থেকে এসেছে এই মতাবলম্বীরা বিশ্বাস করেন দেয় ও আত্মা অনুসন্ধানের মাধ্যমে নির্বাণ লাভ করা সম্ভব, বুদ্ধ ভদ্র জাতে চীনে থেকে যায় সেজন্য 477 সালে সম্রাট জিয়াওয়েন সং পর্বতমালায় একটি মট প্রতিষ্ঠা করে,
যাকে বর্তমানে সারাবিশ্বে শাওলিন টেম্পল নামে চিনে শাওলিন মট প্রতিষ্ঠার পর বুদ্ধ ভদ্র ঈশ্বর সাধনের পাশাপাশি মানসিক এবং শারীরিক শক্তি সাধনার প্রয়োজন অনুভব করেন,
সন্ন্যাসীদেরকে 1000 টি কুংফু শাওলি অভ্যাস করতে হতো!
শাওলিন কুংফু ট্রেনিং হওয়া জাস্ট একটা পার্ট |
তখন তিনি তার দুই
প্রধান শিষ্য হইগোয়ান এবং সিংসাহেব সহায়তায়
ভারতীয় মার্শাল আর্টের সাথে চাইনিজ
মার্শাল মিশলে জন্মদানের’ এক
অবিশ্বাস্য শিল্প শাওলিন কুংফু তখন
থেকেই শাওলিন একটি বুদ্ধমট
হওয়া সত্বেও পৃথিবীর সর্ববৃহৎ
এবং সবচেয়ে ঐতিহ্যবাহী মার্শাল আর্ট স্কুল হিসেবে
খ্যাতি অর্জন করেন’
পৃথিবীর বিখ্যাত শাওলিন মন্দির এর প্রায় 400 জন বৌদ্ধ ভিক্ষু নিয়মিত বসবাস করে তাদের মধ্যে প্রায় 100 জন শিক্ষার্থী যোদ্ধা হিসেবে প্রশিক্ষিত হয়’ এই শিক্ষার্থীদের কাছে কুংফু সুদূর সমরবিদ্যা নয় এটি এক ধরনের আর্থিক সাধনা এখান থেকে ওস্তাদ হয়ে বের হতে হলে একজনকে অবশ্যই শুধু কুংফু জানলেই চলবে না’
সেই সাথে বৌদ্ধ ধর্মের পূর্ণাঙ্গ জ্ঞান আত্মস্থ করতে হবে শাওলিন মট শুরুর দিকের কয়েকশো বছর সন্ন্যাসীদেরকে 1000 টি কুংফু শাওলি অভ্যাস করতে হতো’ এরপর তারা সেরা 100 টি শাওলি বেছে নিয়ে তার চর্চা শুরু করেন পরবর্তীকালে সেগুলোর মধ্য থেকে সেরা 18 টি কুংফু শাওলিন গ্রহণ করা হয়’
শাওলিন
শিক্ষার্থী 10 থেকে 20 বছর সাধারণ কুংফু
বিদ্যা চর্চা করে!
প্রাণী জগৎথেকে অনুপ্রাণিত হয়ে এসব পদক্ষেপ উদ্ভাবন করা হয়েছে বাঘ ভাল্লুক ঈগল সাপ বেজি বান্দর বা কাল্পনিক ড্রাগনের আক্রমণ শত শত বছর পর্যবেক্ষণ করে সেগুলো কম্পুতের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে’ এসব প্রাণীরা যেমন বিদ্যুৎ গতিতে আক্রমণ করে মুহূর্তের মধ্যে শত্রুর নাগালের বাইরে চলে যায়’
কুংফুর উদ্দেশ্য ঠিক তাই এককটি শৈলীর পূর্ণ দক্ষতা অর্জন করতে হলে দীর্ঘ সময় প্রশিক্ষণ গ্রহণ করতে হয় নবীন শিক্ষার্থীদের প্রথমেই পেশীয হাড় শক্ত করার প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়’ একজন আদর্শ শাওলিন শিক্ষার্থী 10 থেকে 20 বছর সাধারণ কুংফু বিদ্যা চর্চা করে’
তারপরে
আরো সাধনা করার ইচ্ছা
থাকলে তখন শুরু হয়
তাদের বিশেষ প্রশিক্ষণ তেমনি
একটি বিদ্যা হল ইজিনজিং বাজিক
কাঠামোর সাথে শরীরের ভেতরের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ
গুলোকে ও শক্তিশালী করে
গড়ে তোলা ইজিনজিংএর মূল
উদ্দেশ্য’
প্রতিদিন
ভোর চারটা থেকে রাত
8 টা পর্যন্ত হাড়ভাঙা পরিশ্রম করে!
এই ছাড়া শরীরের দুর্বল অংশের তীব্র আঘাত সহ্য করার প্রশিক্ষণ খুবই গুরুত্বপূর্ণএসব প্রতিটি বিশেষ দক্ষতা অর্জনের ক্ষেত্রে দেনের কোনও বিকল্প নেই’ বৌদ্ধ ধর্মের শ্যম শাখা সন্ন্যাসীদের মতে আত্মরক্ষার এবং দেশরক্ষার প্রয়োজনে যুদ্ধ করতে হয়’
সেজন্য দেশও ধর্মের বিপদে তারা বহুবার যুদ্ধে নেমেছে 610 সালে কয়েকশো ভয়াবহ ডাকাতের আক্রমণ প্রতিহত করেছিল শাওলিন সাধকেরা’ এরপর 621 সালে তৎকালীন সম্রাট উইয়েনের পক্ষে যুদ্ধ করে বিশাল পেশাদার বাহিনীকে তারা অনায়াসে হারিয়ে দেয়’
প্রতিদিন ভোর চারটা থেকে রাত 8 টা পর্যন্ত হাড়ভাঙা পরিশ্রম আর দুর্দান্ত কশ্বত্থের ফলে অনেকেরই শারীরিক সমস্যা দেখা দেয়’ সেজন্য 800 বছর আগে শাওলিন মন্দির একটি চিকিৎসা কেন্দ্র গড়ে তোলা হয়েছিল শারীরিক বিভিন্ন আঘাত এবং ব্যথা সারিয়ে তুলতে তারা নানান ধরনের ভেষজ উপাদান ব্যবহার করেন|
শাওলিন কুংফু
মাসআলাটির এই কেন্দ্র পৃথিবীবাসীর অজানাই ছিল!
সুদীর্ঘকাল ধরে সন্ন্যাসীদের ব্যবহারিক ফলাফলের উপর ভিত্তি করে এসব ঔষধ প্রস্তুত করা হয় তাদের কিছু ওষুধের 2000 রকমের ভেষজ উপাদান থাকতে পারে’ এসব ঔষধি উদ্ভিদ শাওলিন মন্দির এর আশেপাশে সন্ন্যাসীরা নিজেরাই চাষ করে মাত্র 50 বছর আগেও মাসআলাটির এই কেন্দ্র পৃথিবীবাসীর অজানাই ছিল|
1978 সালে হংকং থেকে একটি চলচ্চিত্র প্রকাশিত হওয়ার পর সারা বিশ্বে শাওলিন কুংফু ব্যাপক জনপ্রিয় হয়ে ওঠে তখন থেকে প্রতিবছর প্রায় 30 লাখেরও বেশি পর্যটক এই মন্দিরে ঘুরতে আসে একইসাথে দেশ-বিদেশের অসংখ্য শিশু কিশোর ও তরুণেরা আসে কুংফু শিখতে
বিশ্বজুড়ে শক্তির মোকাবিলায় যে আসুক না কেন শাওলিন বংশের সাথে শক্তির লড়াই না আজ পর্যন্ত কেউ জিততে পারছে না ভবিষ্যতে কেউ পারবে’
শাওলিন বংশ পৃথিবীর সবচেয়ে সভ্য কিন্তু তাদেরকে বিপদজনক মানুষের সঙ্গে গণ্য করা হয় তবে তাদের অগাত শক্তির রহস্য অন্য কিছু নয়’বরং বছরের পর বছর দিনরাত এক টান হাড়ভাঙ্গা শিক্ষণের ফলাফল’ তবে তাদের এ শক্তিতে না কোন যাদু থাকে না থাকে কোন কথা প্রতারণা
শাওলিন
সন্ন্যাসীরা 6 বছর থেকে কঠোর
পরিশ্রম এবং ট্রেনিং শুরু করে দেয়!
শাওলিন
সন্ন্যাসীরা 6বছর থেকে কঠোর
পরিশ্রম এবং ট্রেনিং শুরু করে দেয়
আর ছোটবেলা থেকে তারা ডিসিপ্লিন অনুযায়ী চালু থাকে’ আর ছোটবেলা
থেকে শাওলিন শিশুরা নানা রকম
ব্যথাদায়ক ট্রেনিংও করে থাকে’
তাই পরিণত বয়সে ব্যথার অনুভূতি হারিয়ে ফেলে আর এগুলোর পাশাপাশি তাদের প্রায় সব সময় তাদের দেনমগ্ন হয়ে থাকতে হয়’আর এই মেডিটেশনের ফেলে শাওলিন সন্ন্যাসীরা নিজের ভারসাম্য এবং ইনক্রেডিবল ফ্লেক্সিবিলিটি অর্জন করতে সক্ষম হয়’
কিন্তু
শাওলিন কুংফু শিশুরা এটা অনায়াসে করে ফেলে শাওলিন শিশুরা
যে কোন খুঁটি বাহ
গাছকে নিজের শরীর দিয়ে অনায়াসে
পেঁচিয়ে ধরতে পারে’ আর এইভাবে
গাছ বা
অন্য কিছুর সাথে পেঁচিয়ে দীর্ঘক্ষন থাকতে পারি
কিন্তু শাওলিন কুংফু হওয়া জাস্ট একটা পার্ট ট্রেনিং এ রকম আরও অনেক যন্ত্রণাদায়ক ট্রেনিং করতে হয় শাওলিন শিশুদের’ এইসব শাওলিন শিশুরা অনেক বছর ধরে ট্রেনিং এবং মেডিটেশনের মাধ্যমে সক্ষমতা অর্জন করতে পারে