আবারো ও আদালতে মুখোমুখি মামুনুল-ঝর্ণা

আবারো ও আদালতে মুখোমুখি মামুনুল-ঝর্ণা

আবারো ও নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি   ২৫ নভেম্বর, ২০২১ ০৯:৫০ | খুব স্বল্প সময় পড়া যাবে ২ মিনিটেপ্রিন্ট

আবারো ও আদালতে মুখোমুখি মামুনুল-ঝর্ণা

মামুনুল হক

ধর্ষণ মামলা হেফাজতে ইসলামের সাবেক যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হকের বিরুদ্ধে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন মামলার বাদী জান্নাত আরা ঝরনা 

আজ বেলা 12 টা থেকে 2 টা পর্যন্ত অভিযুক্তদের উপস্থিতিতে নারায়ণগঞ্জ নারীও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক নাজমুল হাসানের আদালতে আদালতে ধর্ষণের ঘটনায় বর্ণনা সাক্ষ্য দেন তিনি এর আগে সকালে কাশিমপুর কারাগার থেকে আদালতে আনা হয় এই সময় মামুনুল হকের অনুসারীরা আদালত চত্বরে অবস্থান নেয় দুপুর সাড়ে বারোটায় শুরু হয়  পরে আসামিপক্ষের আইনজীবী তাকে জেরা করেন গত 3 এপ্রিল বিকালে সোনারগাঁয়ের  রিসোর্টে কি মামুনুল হক আপনাকে জোর করে নিয়েছে তার জবানবন্দি গ্রহণের প্রক্রিয়া দুইটা পর্যন্ত চলে

মামুনুল হক ও জান্নাত আরা ঝরনাকে অবরুদ্ধ করে রাখে উপজেলা যুবলীগ ছাত্রলীগসহ স্থানীয়  বাসিন্দারা খবর পেয়ে স্থানীয় নেতাকর্মীরা বাড়িঘর ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা ও দুই শতাধিক যানবাহন ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে তখন জান্নাত আরা ঝানাকে দ্বিতীয় স্ত্রী হিসেবে দাবি করলেও একমাস পর সোনারগাঁ থানায় তার বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলা দেয়  জান্নাত আরা ঝর্ণা

নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ থানায় করা ধর্ষণ মামলায় হেফাজতে ইসলামের বিলুপ্ত কমিটির যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হকের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিতে মুখোমুখি হয়েছেন কথিত দ্বিতীয় স্ত্রী জান্নাত আরা ঝর্ণা। গতকাল বুধবার নারায়ণগঞ্জ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল আদালতের বিচারক মো. শাহিন উদ্দিনের আদালতে সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়। এ সময় আদালতে মামলার বাদী ঝর্ণা ও আসামি মামুনুল হক সামনাসামনি ছিলেন।এরআগে গত ৩ নভেম্বর ঝর্ণার করা ধর্ষণ মামলার বিচারকাজ শুরু করার আদেশ দেন আদালত।

নারায়ণগঞ্জ জেলা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) রাকিবুজ্জামান রকিব জানান, কাশিমপুর কারাগার থেকে মামুনুল হককে পুলিশ পাহারায় নারায়ণগঞ্জ আদালতে নিয়ে আসা হয়। মামলার বাদী ঝর্ণাও আদালতে উপস্থিত ছিলেন।

ওদিকে আদালতের কাঠগড়ায় ঝর্ণা বেগম গায়ে বোরকা ছিল এবং তিনি বোরকা পরিধান অবস্থায় ছিলেন এসময় আদালতের বিচারক তাকে বলে যে আপনি বলুন এবং আপনার মুখ দেখান আমরা  আপনাকে একটু দেখতে চাই এ সময় অপর প্রান্তে থেকে মামুনুল হক বলেছেন না তুমি মুখ খুলো না এটা নিশ্চয়ই ইসলামী শরীয়া মোতাবেক একটি অন্যায় কারণ ইসলামের খেলাপ  হবে তুমি মুখ  খোলো না  মামুনুল হকের সেই কথাটাই শুনিনি তিনি তার মুখ খুলে একবার আদালতের বিচারক কে তার  মুখ দেখিয়ে দিয়েছে আদালতে 

যখন মামুনুল হকের আইনজীবীরা দেখল ঝরনা বেগম এখন মামুনুল হকের স্ত্রী হিসাবে অস্বীকৃতি জানাচ্ছে মূলত এর পরে তাকে অনেকগুলো প্রশ্ন করা হয় মামলার আইনজীবী আরো বলেন আপনি মামুনুল হকের বিছানায় দিনের পর দিন নিজের সম্মতিক্রমে  আনন্দ ফুর্তি করে কাটিয়েছেন আর এখন আপনি নিজেই মামুনুল হকের বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলা দিয়েছে এটা কিভাবে করলেন  

আচ্ছা আপনি নিজের বিবেক কে প্রশ্ন করেন একটা মানুষ জোর করে আরেকটা মানুষকে কতবার ধর্ষণ করতে পারে কতদিন দর্শন করতে পারে আমাকে জোর করে কি সত্যিই এতটা বছর জোর করে ধর্ষণ করে  কাটানো  যদি ইচ্ছা না থাকে , এমনটা তো নয় আপনাকে ঘরবন্দি করে রেখেছে   তাহলে বিশ্বাস করা যাইত যে আপনাকে সত্যিই দর্শন করছে আপনার সাথে তো এমন হয়নি যে আপনি ঘর থেকে   বাহির হওয়ার কোনো সুযোগ ছিল না তাই আপনাকে ঘরে রেখে বারবার মামুনুল হক ধর্ষণ করেছে আপনি তো আপনার ঘরেই ছিলেন আপনার ঘর থেকে উনি যে জায়গাটা আসতে বলছে আপনি ওই জায়গায় আসছেন ওই জায়গায় আসছেন তাহলে উনিতো আপনাকে জোর করে আনে নাই তাহলে কিভাবে বলেন যে আপনাকে ধর্ষণ করেছে

তখন জান্নাতেরা ঝর্ণা চুপ করে থাকে কোন কথা বলেনি মামুনুল হক ভেবেছিলেন জান্নাতেরা ঝর্ণা আজ আদালতে তার মুখোমুখি হওয়ার পর হয়তো তার পক্ষে কিছুটা কথা বলবেন কিন্তু না শুরু থেকে জান্নাত আরা ঝর্ণা মামুনুল হক এর বিরোধিতা করেছে আদালতে এমনকি মামুনুল হকের আরো কঠোর সাজা হয় এবং তাকে যেন ফাঁসিয়ে দিয়েছে সেই হিসেবে কাজ করেছে মূলত সেই সময় জান্নাত আরা ঝরনার এই অপকৌশল মামুনুল হকের  আইনজীবী বুঝতে পারে তাকে জেরা করতে থাকে এবং এক পর্যায়ে এই সমস্ত প্রশ্ন গুলো তাকে করা হয়

মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, শহীদুল ইসলামের সঙ্গে ঝর্ণার দাম্পত্য জীবন সুখে-শান্তিতে কাটছিল। তাঁদের ১৭ ও ১৩ বছরের দুই সন্তান আছে। স্বামীর ঘনিষ্ঠ বন্ধু হিসেবে ২০০৫ সালে মামুনুল হকের সঙ্গে ঝর্ণার পরিচয় হয়। 

তাঁদের বাসায় অবাধ যাতায়াত থাকার সুবাদে ছোটখাটো সাংসারিক মতানৈক্যের মধ্যে মামুনুল সুকৌশলে প্রবেশ করে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে দূরত্ব তৈরি করতে থাকেন। সাংসারিক টানাপড়েনের এক পর্যায়ে মামুনুলের পরামর্শে ২০১৮ সালের ১০ আগস্ট শহীদুলের সঙ্গে তাঁর বিচ্ছেদ হয়।

মামুনুলহক কবে কখন কোথায় তাকে নিয়ে গিয়ে তার সাথে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করেছে এই বিষয়ে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছে জান্নাতে ঝর্ণা এবং ঝর্ণা এজাহারে অভিযোগ করেন, বিচ্ছেদের পর অসহায়ত্বের সুযোগ নিয়ে মামুনুলহক তাঁকে ঢাকায় আসার জন্য চোর করেন করেন। ঢাকায় আসার পর তাঁর পরিচিত বিভিন্ন অনুসারীর বাসায় রেখে মামুনুল হক নানাভাবে তাঁকে ‘কুপ্রস্তাব’দেন। 

এর ধারাবাহিকতায় মামুনুলের পরামর্শে কলাবাগানে এক বাসায় সাবলেট থাকতে শুরু করেন। বিয়ের আশ্বাস দিয়ে মামুনুল হক তাঁর সঙ্গে শারীরিক সম্পর্কও করেন। কিন্তু বিয়ের কথা বললে মামুনুল করছি, করব বলে সময়ক্ষেপণ করতে থাকেন। মামুনুল হক তাকে বিভিন্ন জায়গায় নিয়ে ধর্ষণ করেছে এ সময় মামুনুল হকের আইনজীবী ঝর্নাকে বলে বছরের পর বছর ধরে মামুনুল হক আপনাকে ধর্ষণ করেছে নিজের স্ব-ইচ্ছায় একজনের সাথে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করেছেন 

আপনি আর এখন উল্টা বলছেন সে আপনাকে ধর্ষণ করেছে ধর্ষণ কাকে বলে সেটা আপনি জানেন আমাকে বলেন যে আপনাকে জোরপূর্বক এক থেকে দু'বার আপনার সাথে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করবে কিন্তু যেখানে বছরের পর বছর ধরে মামুনুল হকের সাথে আপনি শারীরিক সম্পর্ক করেছে আর এখন আপনি বলছেন মামুনুল হক আপনাকে ধর্ষণ করেছে এমন প্রশ্ন গুলো মামুনুল হকের আইনজীবী তখনই করেছে যখন ঝর্ণা বেগম মামুনুল হকের স্বামী হিসাবে অস্বীকার করেছে আদালতে

আইনজীবীরা বলেছেন এজাহারে ঝর্ণা আরো অভিযোগ করেন, ঘোরাঘুরির কথা বলে ২০১৮ সাল থেকে মামুনুল বিভিন্ন হোটেল, রিসোর্টে তাঁকে নিয়ে যেতেন। সর্বশেষ গত ৩ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয় রয়াল রিসোর্টে ঘুরতে নিয়ে মামুনুল তাঁকে ধর্ষণ করেন। এসময় আদালতে উপস্থিত ছিলেন মামুনুল হক নিজেই রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীরা জানান 41 বার ঝর্নাকে মামুনুল হকের আইনজীবীরা বলেছেন আপনি মামুনুল হকের স্ত্রী জবাবে প্রতিবারই না বলেছেন ঝরনা বেগম 

মামুনুল হকের আইনজীবী বলেন সত্যিকার অর্থে মামুনুল হককে ফাঁসানো হচ্ছে এমন একজন সম্মানী ব্যক্তির সম্মান হানি করার জন্যই এই সমস্ত কথার রটাচ্ছে এবং মামুনুল হককে সমাজের মানুষের কাছে হেয় প্রতিপন্ন করার জন্য একটা গুষ্টি পরিকল্পনা করে যাচ্ছে  

তিনি সাক্ষ্য দেয়ার সময় বলেছেন আমার স্বামীর ঘনিষ্ঠ বন্ধু হবার সুবাদে মামুনুল হকের সঙ্গে পরিচয় হয়েছিল আমার মামুনুল হকের আইনজীবী 41 বার ঝর্নাকে জিজ্ঞেস করেছে আপনি মামুনুল হকের স্ত্রী প্রতিউত্তরে স্বর্ণা বলেছেন মামুনুল হক আমার স্বামী আদালতে মোটামুটি ভাবে আজকের মতন হয়েছে আপনারা জানেন যে ঝরনা তার সকল রকম জবানবন্দি দিয়েছে




একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন