মক্কায় পবিত্র কাবা শরীফ|মুসলিম কাবা উপাসনা করে না করে এক আল্লাহ
অতীতে প্রতি সপ্তাহে দুইবার সকলের জন্য কাবাঘর খুলে দেয়া হতো |
ইব্রাহিম
(আ)ও তারপুত্র ইসমাইল
(আ)একত্রে কাবা নির্মাণ করেন!
করোনা ভাইরাস এর কারণে 2020 সালের 27 ফেব্রুয়ারি ওমরা পালন নিষেধাজ্ঞা জারি |
এখানে
শিকার করা গাছ কাটা
মারামারি করা বা মানুষ হত্যার
মতো কাজ
ছিল সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ তাই
এই মসজিদকে বলা হয় মসজিদ আল-হারাম, আরবি ভাষায়
হারাম শব্দটির একাধিক অর্থ রয়েছে নিষিদ্ধ আরেকটি অর্থ পবিত্র
তবে মসজিদ আল হারাম
শব্দের নিষিদ্ধ বা পবিত্র ছাড়াও
আরো কোনো অন্তর্নিহিত অর্থ
থাকতে পারে,
পাথরটি
রঙ ছিল সাদা মানুষের পাপ শুষে কালো রং হায়!
হযরত ইব্রাহিম আলাইহিস সালাম ও ইসমাইল
আলাইহিস সালাম কাবা ঘর
নির্মাণ সম্পন্ন করার পর একটি
পাথর বসানোর জায়গা ফাঁকা
ছিলা,হযরত ইব্রাহিম আলাইহিস সালাম তার
পুত্রকে পাঠান এখানে বসানোর
মতো
একটি পাথর খুঁজে আনতে,
তখন আল্লাহর আদেশে ফেরেশতার জিবরাঈল
আলাইহিস সালাম জান্নাত থেকে একটি পাথর নিয়ে আসে বলা হয়ে থাকে
পাথরটি যখন পৃথিবীতে এসেছিল,
তখন এর রঙ ছিল
সম্পূর্ণ সাদা ছিল দিনে দিনে মানুষের
পাপ শুষে নিয়ে কালো রং ধারণ করেছে
কাবা শরীফের দক্ষিণ-পূর্ব
কোণে অবস্থিত এই পাথরের নাম
হাযরে আসওয়াদ কাবাঘর বহুবার পুনর্নির্মাণ
ও সংস্কার করা হয়েছে,
তখন হযরত মোহাম্মদ
সাঃ এর নবুয়াত প্রাপ্তির কয়েক বছর আগে কাবার সবচেয়ে বড় পরিবর্তন সাধিত হয়েছে, প্রায় 100 বছর পর পর কাবাঘরের বেশ কিছু
সংস্কার কাজ করা হয় সর্বশেষ 1996 সালের কাবাঘরের বৃদ্ধির আগের চেয়ে মজবুত করা হয়,
সেই সাথে নতুন ছাদ স্থাপন করা হয় এবং বেশ কিছু পাথর পরিবর্তন করা হয়,
কাবা শরীফের উচ্চতা
প্রায় 50 ফুট এবং দৈর্ঘ্য প্রায় 40 ফুট ও প্রস্থ 35 ফুট!
ধারণা করা হচ্ছে
আগামী কয়েকশো বছরে কাবা ঘরে আর নতুন করে কোনো সংস্কার দরকার হবে না, বর্তমানে কাবা শরীফের উচ্চতা প্রায়
50 ফুট এবং দৈর্ঘ্য প্রায় 40 ফুট ও প্রস্থ 35 ফুট অতীতে কাবা ঘরের দুটি দরজা ও একটা
জানালা ছিল,
একটি দরজা এর
ভিতরে প্রবেশ করার জন্য আরেকটি ভিতর থেকে বাইরে বের হওয়ার জন্য ব্যবহার করা হতো,কিন্তু
বর্তমানে শুধু একটি দরজা রয়েছে, এবং কোনো জানালা নেই কাবাঘরের চারটি কোণ কম্পাসের চারটি কাটা বরাবর রয়েছে,
কাবা শুধু মুসলিমদের
আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দু নয় ভৌগোলিকভাবে কাবাঘর পৃথিবীর কেন্দ্রে অবস্থিত পৃথিবীর
180 কোটি মুসলিম প্রতিদিন পাঁচবার পবিত্র কাবার দিকে মুখ করে নামাজ আদায় করে, হজ ও
ওমরার সময় মুসলিমরা কাবার চারপাশের ঘড়ির
কাঁটার বিপরীত দিকে 7বার করে প্রদক্ষিণ করে,
যা তাওয়াফ নামে
পরিচিত যে জায়গা জুড়ে তাওয়াফ করা হয় তাকে বলেন মাতাফ অবিশ্বাস্য হলে ও সত্য যে
কাবাকে প্রদক্ষিণ করা কখনই থেমে থাকে না| এই
মুহূর্তেও কেউ-না-কেউ তাওয়াফ করছে এমনকি অতীতে বন্যার সময় মানুষ সাঁতার কেটে ও প্রদক্ষিণ করেছে,
করোনা কারণে ওমরা
নিষেধাজ্ঞা এক ঝাঁক পাখি কাবা ঘরের চারদিকে তাওয়াফ করতে!
বিশ্বব্যাপী করোনা
ভাইরাস এর বিস্তার এর কারণে সৌদি আরব 2020 সালের 27 ফেব্রুয়ারি বাইরের দেশ থেকে ওমরা
পালন করতে নিষেধাজ্ঞা জারি করেন,এরপর 5 মার্চ পুরানো পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করার জন্য
মক্কা ও মদিনার 2 পবিত্র মসজিদে মুসল্লিদের জন্য বন্ধ করা হয়|
তার পরেরদিন মসজিদ
মাতাফ আবারো খুলে দেওয়া হলেও মার্চের মাঝামাঝি কাবা শরীফ নামাজ জুম্মার নামাজ এবং
তাওয়াফ করার ব্যাপারে আসে নিষেধাজ্ঞা, বাহির থেকে মুসল্লিদের অংশগ্রহণ না থাকলেও কাবা
ঘর এবং মসজিদুল হারামের কর্মকর্তা-কর্মচারী ও খাদেমরা মিলে এই সময় নির্দিষ্ট দূরত্ব
বজায় রেখে জামাতের সাথে নামাজ আদায় করতে থাকে|
তবে করণা ভাইরাসের
কারণে ও কাবাকে প্রদক্ষিণ করা একেবারেই থেমে নেই এই সময় সৌভাগ্যবান' কিছু মুসলিম তাওয়াফ
করার সুযোগ পায়, মসজিদুল হারামের বিতর দিয়ে ও ছাদের উপর দিয়ে সীমিতসংখ্যক লোক বাবাকে
প্রদক্ষিণ করতে থাকে, কাবা শরীফে মানুষের পদচারণা কমে যাওয়ার পর হঠাৎ করেই দেখা যায়
আশ্চর্য এক ঘটনা|
এক ঝাঁক পাখি
কাবা ঘরের চারদিকে তাওয়াফ করতে থাকে উপস্থিত কেউ একজন তার স্মার্টফোনে ভিডিও করে সামাজিক
মাধ্যমে শেয়ার করলে ভিডিওটি ইন্টারনেটে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করে’
গিলাফ তৈরি করতে
670 কেজি রেশম এবং 15 কেজি স্বর্ণ ব্যবহার করা হয়!
কাবা শরীফের গুরুত্বপূর্ণ
অলংকার এর উপরের কালো পর্দার নাম কিছোঁয়া অনেকে একে কাবা শরীফের গিলাফ নামে ও চেনে,
মুসলিম বিশ্বের সেরা ক্যালিগ্রাফার এবং শিল্পীরা মূল্যবান এই আবেরন রেশমের তৈরি কালো কাপড়ের
উপর সোনা ও রূপার সুতা দিয়ে লেখা হয় পবিত্র কুরআনের আয়াত এই গিলাফ তৈরি করতে
670 কেজি রেশম এবং 15 কেজি স্বর্ণ ব্যবহার করা হয়|
এই সিল্ক আসে ইতালি থেকে এবং সোনা ও রূপার প্রলেপ দেওয়া সুতা
আসে জার্মানি থেকে আধ্যাত্মিক বিচারে কিছোঁয়া অবশ্যই অমূল্য’ কিন্তু এর বাজারমূল্য
হিসাব করতে গেলে একটি কিছোঁয়া তৈরি করতে প্রায় 50 কোটি টাকার বেশি খরচ হয়.
কাবা শরীফের গিলাফ
কালো ছাড়া অন্য কোন রং আমরা কল্পনা করতে পারিনা কিন্তু অতীতে সবুজ লাল এবং সাদা রঙের
গিলাফ ব্যবহার করা হতো আব্বাসীয় খিলাফতের সময় থেকে কালো রংয়ের গিলাফ এর প্রচলন শুরু
হয় অতীতে একটি গিলাফের উপর আরেকটি নতুন গিলাফ পড়ানো হতো|
একসাথে বহু গিলাফের
ওজনের কারণে কাবা ঘরের উপর প্রচুর চাপ পড়তো তাই পরবর্তীতে শুধুমাত্র একটি গিলাফ রাখার
সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে’ প্রতিবছর হজের মৌসুমে আরাফাত দিন গিলাফ পরিবর্তন করা হয়
এবং পুরনো গিলাফ ছোট ছোট অংশ কেটে বিভিন্ন জাদুঘর এবং বিশিষ্টজনদের উপহার হিসেবে পাঠানো
হয়|
কাবা ঘরের ভিতরে
কি আছে তা নিয়ে রয়েছে বহু জল্পনা-কল্পনা!
কাবা ঘরের ভিতরে
কি আছে তা নিয়ে রয়েছে বহু জল্পনা-কল্পনা অতীতে প্রতি সপ্তাহে দুইবার সকলের জন্য কাবাঘর
খুলে দেয়া হতো’ কিন্তু দিনে দিনে আগত মুসল্লিরা সংখ্যা অনেক বেড়ে যাওয়ায় বর্তমানে
বছরে মাত্র দুইবার কাবার দরজা খোলা হয় এবং কতিপায় সম্ভ্রান্ত ব্যক্তিরা এর ভিতরে
প্রবেশ করেন|
কাবা ঘরের দরজা
খোলার দিন লক্ষ লক্ষ মুসলিম এর সামনে ভিড় করে এক ঝলক দেখার জন্য কাবা ঘরের ভেতরে রয়েছে
ছাদকে ধরে রাখার জন্য তিনটি স্তম্ভ’ এর মাঝে বরাবর একটি টেবিল এবং সোনা ও রুপার তৈরি
কিছু প্রদীপ ঝুলানো আছে, ভেতর থেকে কাবা ঘরের ছাদের উপরের দিকটা কুরআনের আয়াত সম্বলিত
সবুজ কাপড় দিয়ে মোড়া কাবা শরীফের ছাদে ওঠার জন্য এর ভেতরে আরো একটি দরজা আছে|
কাবার ভেতরে প্রায়
50 জন লোক নামাজ আদায় করতে পারবে এইটি পৃথিবীর একমাত্র আল্লাহ তালার ঘর যেখানে আপনি যেদিকে খুশি সে দিকে দাঁড়িয়ে নামাজ আদায় করতে পারবেন,
মহানবী
কাবা শরীফের চাবি বনি সাইবার গোত্রেকে অর্পণ করেন|কেয়ামত পর্যন্ত থাকবে!
ইসলাম প্রচারিত
হওয়ার আগে থেকে কুরাইশ গোত্রের একাধিক পরিবার কাবা শরীফের দেক বাল করতো|কিন্তু সকল
পরিবার তাদের নিয়ন্ত্রণ হারালে ও শুধুমাত্র বনি সাইবার পরিবার তাদের কর্তৃত্ব বজায়
রাখে’ মক্কা বিজয়ের পর মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কাবা শরীফের চাবি বনি
সাইবার গোত্রের উসমান রাদিয়াল্লাহু আনহুর কাছে অর্পণ করেন|এখনও কাবা ঘরের চাবি এই
পরিবারের কাছে আছে এবং মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহিস সালামের নির্দেশ অনুযায়ী কেয়ামত
পর্যন্ত চাবিটি তাদের কাছেই থাকবে?
পবিত্র কাবা ঘর
থেকে মাত্র 21 মিটার দূরত্বে অবস্থিত আল্লাহর কুদরতের বাস্তব নিদর্শন জমজম কূপ জমজমের
এক ফোঁটা পানির যে খনিজ গুনাগুন আছে তার পৃথিবীর অন্য কোন পানিতে নেই” ল্যাবরেটরীতে
পরীক্ষা করে দেখা গেছে পৃথিবীর সাধারণ পানির তুলনায় জমজমের পানি 1000 গুন বেশী বিশুদ্ধ
পৃথিবীর সবচেয়ে সেরা পানির উৎস জমজম কূপ|