পৃথিবীর সবচেয়ে বিশাল আয়তনের এই মিয়ানমার,শহরকে ভূতের শহর বলা হয়
ভারর্মা
রাজধানী ছিল রেংগু 1989 সালে
ভারর্মা পরিবর্তন করে মিয়ানমার!
মিয়ানমার,শহরকে ভূতের শহর বলা হয় |
বহু আগে
থেকেই এই অঞ্চল ভারর্মা
নামে পরিচিত ছিল অতীতে ভারর্মা
রাজ্যের রাজধানী ছিল রেংগুর 1989 সালের
ভারর্মা নাম পরিবর্তন করে
রাখা
হয় মিয়ানমার!তখন দেশটি
রাজধানীর নাম ওপরিবর্তন করা
হয় রেঙ্গুন থেকে হয়ে যায়
ইয়াঙ্গুন এরপর শুধু
নাম নয় ভৌগোলিকভাবে
দেশটির রাজধানী পরিবর্তিত হয়েছে
বর্তমান মিয়ানমারের রাজধানীর নাম নেপিডো মিয়ানমারের নতুন রাজধানীর নেপিডো অত্যন্ত গোপনে শূন্য থেকে গড়ে তোলা হয়েছে! মিয়ানমারের সামরিক জান্তা সরকার 2002 সাল থেকে নতুন রাজধানী নির্মাণের কাজ শুরু করে কিন্তু মিয়ানমারের নেতারা তাদের রাজধানী বদলের সিদ্ধান্ত জনগণকে জানাই 2005 সালের,
নতুন রাজধানীর নাম গোপন করা
হয় নেপিডো!
মিয়ানমার সরকার সুচি |
সেই ঘোষণার চার মাস পরে জানানো হয় নতুন রাজধানীর নাম,সেই নতুন নামটি হল নেপিডো যার অর্থ রাজাদের বাসভূমি 2006 সালের মার্চ মাসে মিয়ানমার সরকারের ভিত্তিতে রাজধানীর মর্যাদা দেয়, তবে শহরটির নির্মাণকাজ শেষ হয় 2012 সালে নির্মিত কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল নামের একটি স্বতন্ত্র প্রশাসনিক বিভাগে শহরটির অবস্থান|
নেপিডো শহরের আয়তন প্রায় 7 হাজার বর্গকিলোমিটার যা লন্ডন শহরের প্রায় চারগুণ বড় নেপিডো শহরটির খুবই পরিকল্পিত এবং সাজানো-গোছানো অনেকটা অস্ট্রেলিয়ার রাজধানী ক্যানবেরা এবং ব্রাজিলের রাজধানী ব্রাজিলিয়ান এর মত”রাজধানী পরিবর্তনের বিষয়টি মিয়ানমারেই প্রথম ঘটেনি অতীতেও নানা কারণে নতুন শাসকের হাত ধরে বহু সাম্রাজ্যের রাজধানী পরিবর্তিত হয়েছে,
আধুনিককালে
পাকিস্তান নাইজেরিয়া মিশর কাজাকিস্তান ব্রাজিলের
মতো দেশগুলো যথাযথ কারণে তাদের
রাজধানী পরিবর্তন করেছে |কিন্তু মিয়ানমারের
রাজধানী পরিবর্তনের কোন সঠিক কারণ
জানা যায় না অনেকেই
মনে করেন পুরনো রাজধানী
ইয়াঙ্গুনে সমুদ্রের
খুব কাছে অবস্থিত হওয়ার
কারনে সামরিক নেতারা সমুদ্রপথের
রাজধানীতে হামলা হওয়ার আশঙ্কা
করছিল”
অনেকে মনে
করেন কোন জ্যোতিষীর পরামর্শে
এই রাজধানী স্থানান্তরিত হতে পারে!
এমনকি অনেকে
আবার মনে করেন কোন
জ্যোতিষীর পরামর্শে এই রাজধানী স্থানান্তরিত
হতে পারে যদিও এগুলোর
চেয়েও অনেক জোরালো কারণ
স্বয়ং এর সাবেক রাজধানীতে
আছে রেঙ্গুন প্রায় 70 লক্ষ বেশি লোক
বসবাস করে,শহরটি নতুন অবকাঠামো
নির্মাণের প্রায় শেষ সীমায়
পৌঁছে গিয়েছে তার মানে রাঙ্গুনিয়ার
আর খুব বেশি খালি জায়গা
অবশিষ্ট নেই’
একই কারণে
অবশ্য বাংলাদেশের রাজধানী ও ঢাকা থেকে অন্য
কোথাও সরানো উচিত করে
নগর পরিকল্পনাবিদরা মনে করেন|এছাড়া বেঙ্গল
শহরের জনসংখ্যা 2050 সালের মধ্যে দ্বিগুণ
হবার সম্ভাবনা আছে রেঙ্গুন প্রতিষ্ঠা
করা হয়েছিল উপমহাদেশে ব্রিটিশ শাসনের সময়,
ব্রিটিশ
নৌবাহিনী যাতায়াতের বিশেষ সুবিধার কারণেই
উপকূলীয় অঞ্চলে শহরটি গড়ে
তোলা হয়েছিল, পরবর্তীতে এখানেই মিয়ানমারের রাজধানী
প্রতিষ্ঠিত হয় কিন্তু ভৌগোলিকভাবে
জায়গাটি মিয়ানমারের প্রান্তে অবস্থিত|এখান থেকে সমগ্র দেশ
পরিচালনা করা যেকোনো সরকারের
পক্ষেই বেশ কঠিন’
সে কারণেই মিয়ানমারের সামরিক
শাসকেরা দেশটির রাজধানী অনেকটা
কেন্দ্রীয় অঞ্চলের দিকে নিয়ে গেছে,
মিয়ানমারের নতুন রাজধানীর নির্মাণের
প্রকল্প অত্যন্ত দ্রুত গতিতে সম্পন্ন
করা হয়েছে, নেপিডো শহর গড়ে
উঠতে সময় লেগেছে মাত্র
10 বছর সে জন্য মিয়ানমারের
ধারাবাহিক সরকার প্রায় চার
বিলিয়ন ডলার খরচ করেছে,
তিনটি
হোটেল মোটেল জোনে 100 টিরও
বেশি বিলাসব হুল হোটেল আছে!
দর্শনার্থীদের
আকৃষ্ট করার মত সবকিছু
নেপিডো আছে এই শহরের
রাস্তা গুলো নেপিডো বিশ লেনের হাইওয়ান সমান প্রশান্ত,
শহরের ভেতর থাকা তিনটি
হোটেল মোটেল জোনে 100 টিরও
বেশি বিলাসব হুল হোটেল আছে এছাড়া
পর্যটকদের জন্য গল্প এবং
জাদুঘর রয়েছে|
তবে সবচেয়ে মজার বিষয় হলো
ইয়াঙ্গণ শহরে থাকার মিয়ানমারের
সবচেয়ে বিখ্যাত স্থাপনে একটি
রেপ্লিকা তৈরি করা হয়েছে এখানে,ইয়াঙ্গুনে থাকা
খাঁটি সোনায় মোড়া বিখ্যাত
এই স্থাপনা নাম শ্বেডাগন প্যাগোডা আর নেপিডোতে তৈরীর নকল এই প্যাগোডার নাম উপত
শান্তি প্যাগোডা|
320 ফুট উঁচু
এই মন্দিরের গৌতম বুদ্ধের একটি
দাঁত সংরক্ষিত আছে, নেপিডোতে মিয়ানমার
সরকারের আইনসভা সর্বোচ্চ আদালত
রাষ্ট্রপ্রতির প্রাসাদ মন্ত্রিসভার সরকারি বাসভবন মন্ত্রণালয়সমূহের সদরদপ্তর এবং মিয়ানমার সেনাবাহিনীর
প্রধান কার্যালয় রয়েছে|
বিভিন্ন
দেশের দূতাবাস নির্মাণের জন্য বহু জায়গা
ফাঁকা রাখা হয়েছে যদিও
এখনো পর্যন্ত নেপিডোতে শুধুমাত্র একটি দেশের দূতাবাস
রয়েছে, সেই দেশটি হল
বাংলাদেশ বাংলাদেশ বাদে বাকি দেশগুলো
দূতাবাস এখন ইয়াঙ্গণ অবস্থিত’
রাজধানী শহরের সবকিছু থাকলেও
নেপিডো শহরের একটি গুরুত্বপূর্ণ
বিষয় অনুপস্থিত আর তা হলো
জনসংখ্যা|
এই রাজধানী শহরে মাত্র
10 লাখ এরকম লোক বসবাস
করে!
নতুন এই রাজধানী শহরে
মাত্র
10 লাখ এরকম লোক বসবাস
করে এদের অধিকাংশই আবার
রাজধানীর আশপাশের উপশহরে বাস করে”
এই লোক গুলো নেপিডো গড়ে ওঠার
আগে থেকেই এখানকার বাসিন্দা|
হয়তো প্রশ্ন জাগতে পারে
লোকজন কেন
এখানে বসবাস করতে চায় না’
তার কারণ হলো অবকাঠামোগত
দিক থেকে যথেষ্ট উন্নত
হলেও স্বাস্থ্যসেবার ঘাটতি কার্যকরী ও
উন্নত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান অনুপস্থিতি
এবং অর্থনৈতিক সুযোগ সুবিধার অভাবে
মিয়ানমারের অধিকাংশ লোক তাদের নতুন
এই রাজধানী শহরে বসবাস করতে
চায় না|
সে কারণেই এই শহরটি এখন
এক ধরনের ঘোষ টাউন
ভূতের শহর হিসেবে বিশ্বব্যাপী পরিচিত
বহু সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী
নেপিডো শহরে বাস করলেও
তাদের পরিবার এখনো রেঙ্গুনে
থাকে” এখানকার জনসংখ্যার ঘনত্ব প্রতি বর্গ
কিলোমিটারে
মাত্র 131 জন তার কারণ
পুরো শহরের সিংহভাগ জায়গায়
এখনও ফাঁকা|
নেপিডো শহরের সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্য হলো এখানকার রাস্তা অধিকাংশ রাস্তায় প্রায় বিশ লেনের হাইওয়ান প্রশস্ত কিন্তু এখানে গাড়ি চলাচল হয় না বললেই চলে,
নেপিডোতে শহরে
একটি বিমানবন্দর ও আছে!
অনেক ক্ষেত্রেই শহরের একটি অবকাঠামো থেকে আরেকটি অবকাঠামোতে যেতে প্রায় ঘন্টা খানেক সময় লাগে|আর যাবার পথে প্রশস্ত রাস্তার পাশের চোখে পড়ে গ্রামের দৃশ্য, নেপিডোতে শহরে একটি বিমানবন্দর ও আছে এই বিমানবন্দরটি প্রতিবছর প্রায় 35 লক্ষ যাত্রী সেবা দিতে পারবে,
কিন্তু ব্যস্ততম দিনেও হাতে গোনা মাত্র দশ বারোজন লোক বিমানবন্দরটি ব্যবহার করে মূলত সেনাবাহিনীর কর্মকর্তাদের যাতায়াতের কাজে এই ব্যবহৃত হয়’এখানকার শপিংমলগুলো একইরকম ফাঁকা শুধুমাত্র কূটনৈতিক ব্যক্তিদেরকেই এখানে শপিং করতে দেখা যায় নেপিডোর বিলাসবহুল হোটেল এর সম্পূর্ণ ফাঁকা পড়ে থাকে, প্রকৃতপক্ষে বহু অর্থে নির্মিত এই রাস্তা শহর মরুভূমির মতো খা খা করছে|
অনেকেই
এই নেপিডোর উন্নত
ভবিষ্যৎ দেখছেন!
যদিও অনেকেই এই নেপিডোর উন্নত
ভবিষ্যৎ দেখছেন কারণ শহরটি
তৈরি করা হয়েছে ভবিষ্যতের
কথা মাথায় রেখে অদূর
ভবিষ্যতে
জনসংখ্যার বিস্ফোরণ ঘটলে শহরটি মিয়ানমারের
জন্য বেশ কার্যকরী আবাস
হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হতে পারে হয়ত
তখন নেপিডোর ভূতের
শহর তকমা থেকে মুক্তি পাবে|
মিয়ানমার জাতিগত
নিপীড়ন মূলক কর্মকান্ড ওই দেশটি জন্য তৈরি করেছে রোহিঙ্গা সংকট এই সংকটের বোজা এখন
বাংলাদেশের ঘাড়ে,দেশটি কূটনৈতিক বাংলাদেশটা যেমন সংকটে ফেলেছে তেমনি নিজেরা হচ্ছে
কোণঠাসা কয়েকটি দেশ ছাড়া আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে মিয়ানমার,এখন নির্যাতনের
আরেক নাম অথচ সুন্দর এই দেশটি হতে পারতো বাংলাদেশের বন্ধু হতে পারতো মানবিক পৃথিবীর
কাছে খুলে দিতে পারতো নিজেদের মোহনীয় প্রকৃতি তখন মিয়ানমার হয়ে উঠল পর্যটকদের স্বর্গভূমি